আসমত আলী শিকদার: একজন মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদের জীবনী
আসমত আলী শিকদার (৩১ ডিসেম্বর ১৯৩৯ - ৯ মে ২০০১) ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং আইনজীবী। তিনি তৎকালীন পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার জন্ম বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার কালিকাবাড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম আবদুল মজিদ শিকদার এবং মাতার নাম আফিয়া খাতুন। তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এক ছেলে এবং দুই মেয়ে ছিলেন।
শিক্ষা জীবনে তিনি বামনার সরোয়ারজান পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক এবং বরিশালের বিএম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে ইতিহাসে বিএ, ১৯৬২ সালে এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ১৯৫৩ সালে ছাত্রলীগে যোগদান করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন।
১৯৬৩ সালে নরসিংদী কলেজে ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। তবে ১৯৬৪ সালে শিক্ষা আন্দোলন ও কনভোকেশন আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে পাকিস্তান সরকার তার এমএ ডিগ্রি বাতিল করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। ১৯৬৫ সালে ছয় দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। জেল থেকে মুক্তির পর ঢাকা কোর্টে আইন পেশা শুরু করেন।
১৯৬৯ সালে তিনি বরগুনা মহাকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বরগুনা এলাকার এমএলএ নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে বরগুনা মহাকুমার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আসমত আলী শিকদার ৯ মে ২০০১ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন এবং মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।