অবৈধ ডাম্পার: বাংলাদেশের একটি জাতীয় সমস্যা
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ডাম্পারের দৌরাত্ম্য বহুদিন ধরেই চলে আসছে। এরা কেবলমাত্র সড়ক ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং মানুষের জীবন ও পরিবেশের জন্যও বিরাট হুমকি সৃষ্টি করে। সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, এবং অন্যান্য জেলায় এই সমস্যা বিশেষভাবে প্রকট।
- *সাতক্ষীরা:** সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইটভাটার মাটি, বালু, ও ইট বহনকারী অবৈধ ডাম্পার, ট্রাক্টর, ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের দাপট বেড়েই চলেছে। এতে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দুর্ঘটনা বাড়ছে, শব্দদূষণ ও ধুলোবালির কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একজন কলেজ শিক্ষক, মফিজুল ইসলাম, সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অবৈধ ডাম্পারের চাপায় নিহত হয়েছেন।
- *কক্সবাজার:** কক্সবাজারের নয়টি উপজেলার সাতটিতে প্রায় দুই হাজার অবৈধ ডাম্পার ও পিকআপ চলাচল করে। এগুলো পাহাড় কাটার মাটি, নদী-খাল থেকে উত্তোলিত বালু, এবং বনাঞ্চলের গাছ পরিবহণ করে। উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটার দৃশ্য স্পষ্ট। বন বিভাগ ও ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালালেও পাহাড়নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না। বেশিরভাগ ড্রাইভার অপ্রাপ্তবয়স্ক। উখিয়ায় প্রভাবশালী আটটি সিন্ডিকেট হাজারের অধিক অবৈধ ডাম্পার ব্যবহার করে বন ও পাহাড় কাটার কাজে। এসব ডাম্পার মালিকদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায় করে উখিয়ার মামুন ও কোটবাজারের শরীফ চৌধুরী। বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান অবৈধ ডাম্পারের চাপায় নিহত হয়েছেন।
- *সমস্যার মূল:** অবৈধ ডাম্পারের সমস্যা একাধিক কারণের সমন্বয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে দুর্বল আইন প্রয়োগ, প্রশাসনের উদাসীনতা, দুর্নীতি, এবং অবৈধ অর্থের প্রভাব। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতাও এই সমস্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে।
- *সমাধান:** এই সমস্যার সমাধানের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ, প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা, দুর্নীতি দমন, এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষায় এবং মানুষের জীবন রক্ষা করার লক্ষ্যে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।