মামুন

মামুন নামটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে জড়িত। তাদের মধ্যে তিনজনের জীবনী সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:

  • *১. সালাউদ্দীন মাহমুদ (মামুন):** ১৯২৮ সালের ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী এই পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তাঁর পিতা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ছিলেন চিকিৎসক এবং মাতা সামসুন্নাহার মাহমুদ ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও নারী মুক্তি আন্দোলনের নেত্রী। কলকাতার প্র্যাট মেমোরিয়াল স্কুল থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করে তিনি কলকাতার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ভারত বিভাগের পর পূর্ব বাংলায় ফিরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণসংযোগে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পাকিস্তান সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ সার্ভিসে যোগ দিয়ে তিনি বিভিন্ন স্থানে মহকুমা ও জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। ভাষা আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অসামান্য। অসহযোগ আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরোধিতার জন্য তিনি নিহত হন। ১৯৯৫ সালে তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয় এবং ঢাকার একটি সড়কের নামকরণ করা হয় মামুন মাহমুদ সড়ক।
  • *২. আবদুল্লাহ আল মামুন:** ১৯৪২ সালের ১৩ জুলাই জামালপুরে জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তি একজন বিখ্যাত নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক এবং অভিনেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নিজের রচিত এবং অন্যের রচিত অনেক নাটকে অভিনয় ও পরিচালনা করেছেন। বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ কাব্যনাটকের নির্দেশনা ও অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ৭টি উপন্যাস, একটি আত্মজীবনী এবং একটি ভ্রমণ কাহিনী রচনা করেন। টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র পরিচালনায়ও তিনি সক্রিয় ছিলেন। তাঁর অর্জিত পুরষ্কারের মধ্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরষ্কার এবং একুশে পদক উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ সালের ২১ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।
  • *৩. আবদুল্লাহ আল-মামুন সোহরাওয়ার্দী:** ১৮৭০ সালে পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তি ছিলেন একজন পন্ডিত, রাজনীতিবিদ ও লেখক। লন্ডনের গ্রেস ইন থেকে বার অ্যাট-ল প্রাপ্ত হন এবং ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, কন্সটান্টিনোপল ও কায়রোতে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯১১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ডিপার্টমেন্টের প্রধান ও ঠাকুর প্রফেসর অব ল নিযুক্ত হন। রাজনীতিতে যোগদান করে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদে নির্বাচিত হন এবং ‘All India Muslim Legislators Association’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। খিলাফত আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। নবনূর ও কোহিনূর নামক দুটি বাংলা সাময়িকীর নিয়মিত লেখক ছিলেন এবং বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। ১৯৩৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • মামুন নামে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে অবদান রেখেছেন।
  • সালাউদ্দীন মাহমুদ (মামুন) মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
  • আবদুল্লাহ আল মামুন ছিলেন একজন বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব।
  • আবদুল্লাহ আল-মামুন সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একজন পন্ডিত, রাজনীতিবিদ এবং লেখক।

গণমাধ্যমে - মামুন

২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

মামুন নামের এক ব্যক্তি ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন।

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন।