বাংলাদেশ: একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের গৌরবময় ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা
দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে পরিচিত এই দেশটি ভৌগোলিকভাবে পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্বে মিয়ানমার ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর দ্বারা ঘেরা। ১৭ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। নদীমাতৃক এই ভূখণ্ডে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী বয়ে গেছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এবং দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার এখানেই অবস্থিত।
প্রাচীনকালে বঙ্গ, পুণ্ড্র, গৌড়, গঙ্গাঋদ্ধি, সমতট ও হরিকেল নামক জনপদ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে গড়ে উঠেছিল। মৌর্য যুগে এ অঞ্চল মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। পাল, চন্দ্র, সেন রাজবংশের শাসনকালে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতি সাধিত হয়। ১২০৪ সালে বখতিয়ার খলজির গৌড় বিজয়ের পর এ অঞ্চলে ইসলামের আগমন ঘটে। মুঘল আমলে সুবাহ বাংলা বিশ্বের অন্যতম ধনী অঞ্চল ছিল, বিশ্বের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদনের ১২% উৎপাদন হতো এখানে।
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়ের পর বাংলাদেশ ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর পূর্ব বাংলা (পরে পূর্ব পাকিস্তান) নামে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হন।
স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সম্মুখীন হয়। তবে গত কয়েক দশকে দেশটি অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব, দারিদ্র্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও, পরিবেশগত ঝুঁকি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ এখনো মোকাবেলা করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা অনুসরণ করে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য।