পার্বত্য চট্টগ্রাম

পার্বত্য চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোমুগ্ধকর অঞ্চল, যা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি- এই তিনটি জেলা নিয়ে গঠিত। পাহাড়, উপত্যকা এবং ঘন বনাঞ্চলে পরিপূর্ণ এই অঞ্চলের নামকরণ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। ১৮৬০ সালের পূর্বে এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ ছিল, পরবর্তীতে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে গঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের আমলে এটিকে তিনটি জেলায় বিভক্ত করা হয়। এই অঞ্চলটি দেশের মোট বনভূমির এক বিশাল অংশ নিয়ে গঠিত এবং কর্ণফুলী নদী, কাপ্তাই হ্রদ এবং তাজিনডং পাহাড় এর গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। ঐতিহাসিকভাবে, ত্রিপুরা রাজ্য, আরাকান রাজ্য এবং গৌড়বঙ্গের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জড়িততা রয়েছে। মুঘল এবং ব্রিটিশ শাসনামলেও এ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখানে চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বসবাস করে। বর্তমানে, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ। অর্থনীতি প্রধানত ভূমিভিত্তিক, যেখানে জুম চাষ, চা চাষ, এবং গ্যাস উৎপাদন উল্লেখযোগ্য। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একে বিশ্বের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তবে, অনেক বছর ধরে এ অঞ্চলে সশস্ত্র সংঘর্ষ এবং উন্নয়নের অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিরন্তর চলেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা নিয়ে গঠিত।
  • ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম থেকে পৃথক হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠিত হয়।
  • ১৯৮৪ সালে তিনটি স্বাধীন জেলায় বিভক্ত হয়।
  • এখানে বৌদ্ধ, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বসবাস।
  • কর্ণফুলী নদী ও কাপ্তাই হ্রদ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান আকর্ষণ।