সলিমুল্লাহ খান: একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও লেখক
ডঃ সলিমুল্লাহ খান (জন্ম: ১৮ আগস্ট, ১৯৫৮) একজন প্রতিভাবান বাংলাদেশী চিন্তাবিদ, লেখক ও শিক্ষাবিদ। তিনি তার গভীর জ্ঞান, বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা এবং সাহসী মতামতের জন্য সুপরিচিত। তার লেখা ও বক্তৃতা বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বিষয়াবলী নিয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
সলিমুল্লাহ খান ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট কক্সবাজারের মহেশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট উচ্চ বিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবন:
তার উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা নিউ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় যান এবং ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশে ফিরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ULAB) এ অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর এডভান্সড থিওরির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিন্তাধারা ও লেখা:
ডঃ সলিমুল্লাহ খান মার্কসবাদী চিন্তাধারা, ঔপনিবেশিকতাবিরোধী আন্দোলন এবং পশ্চিমা হস্তক্ষেপের সমালোচনার মাধ্যমে তার লেখা গুলোতে সমসাময়িক বিশ্বের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে বিশ্লেষণ করেন। তিনি কার্ল মার্ক্স, জাক লাকঁ, আহমদ ছফা, প্লাতো, ফ্রানৎস ফানোঁ, শার্ল বোদলেয়ার, ওয়াল্টার বেঞ্জামিন, এডওয়ার্ড সাইদ, মিশেল ফুকো প্রমুখের চিন্তাধারার প্রভাব তার লেখায় স্পষ্ট। তিনি লালন শাহ, রামপ্রসাদ সেন, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জসীমউদ্দীন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখের উপরও গবেষণা করেছেন এবং লিখেছেন।
সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান:
সলিমুল্লাহ খান বাংলা ভাষার প্রতি গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসা পোষণ করেন এবং তার লেখায় বাংলা ভাষার ব্যবহারের পক্ষে তিনি বলিষ্ঠ যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি শাহবাগ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি সাম্প্রদায়িকতা ও চরমপন্থার বিরোধী এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
সলিমুল্লাহ খানের অবদান বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সমাজের জন্য অমূল্য। তার গভীর চিন্তা, লেখা এবং সামাজিক অবস্থান তাকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে একজন অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।