মহেশখালী: কক্সবাজারের একটি মনোমুগ্ধকর দ্বীপ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে, চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত মহেশখালী একটি সুন্দর দ্বীপ। প্রশাসনিকভাবে এটি একটি উপজেলা এবং এর সদর দপ্তরও এখানেই অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মহেশখালীর জনসংখ্যা প্রায় ৩২১,২১৮ জন।
ভৌগোলিক অবস্থান: ২১°২৮´ থেকে ২১°৪৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫১´ থেকে ৯১°৫৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত মহেশখালী চারদিকে বঙ্গোপসাগরের পানিতে ঘেরা। উত্তরে চকোরিয়া, দক্ষিণে কক্সবাজার সদর ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে চকোরিয়া ও কক্সবাজার সদর, এবং পশ্চিমে কুতুবদিয়া উপজেলা এবং বঙ্গোপসাগর এর সীমানা। মহেশখালী চ্যানেল, কোহালিয়া নদী, বদ্দার খাল, নোয়াচি খাল ও করিয়া খাল এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য জলাশয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়ী, ১৫৫৯ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহেশখালী দ্বীপের উৎপত্তি হয়। মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, মৈনাক পাহাড়, সোনাদিয়া দ্বীপ এবং রাখাইনদের কেয়াং এর ঐতিহ্যবাহী দিকগুলোকে প্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও মহেশখালী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতন এবং গণহত্যা এখানে সংঘটিত হয়েছিল।
অর্থনীতি: মহেশখালীর অর্থনীতি মূলত কৃষি, মৎস্য ও লবণ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। লবণ, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ ও শুঁটকি মাছ এর প্রধান রপ্তানিদ্রব্য। এছাড়াও, মৃৎশিল্প, হস্তশিল্প, তাঁতশিল্পের মতো কুটিরশিল্প এবং লবণ কারখানা, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, ময়দাকল, বরফকল এর মতো ক্ষুদ্র শিল্প কারখানাও রয়েছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: মহেশখালীতে ১০টি কলেজ, ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১২টি কেজি স্কুল এবং ৩৩টি মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মহেশখালী কলেজ, মহেশখালী সরকারি ভার্নাকুলার স্কুল এবং মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম। এছাড়াও, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে।