ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড: বাংলাদেশের একটি বিতর্কিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বাংলাদেশের একটি বৃহৎ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যা দেশের বিভিন্ন বড় বড় অবকাঠামোগত প্রকল্পে জড়িত। তবে, সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর তদন্তের প্রতিবেদনে অভিযোগ আছে যে, ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে রেলওয়ের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজ পেয়েছে এবং প্রকল্পের খরচ অন্যায্যভাবে বৃদ্ধি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড, তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সঙ্গে মিলে রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করেছে। এই সিন্ডিকেট রেল ভবনের উচ্চ পদে নিজস্ব কর্মকর্তা বসিয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ বৃদ্ধি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে অর্থ পাচারের ও অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।
দুদক ২০১৮ সালে এই অভিযোগগুলোর অনুসন্ধান শুরু করেছিল তবে তদন্ত প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ পায়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, প্রভাবশালী মহলের চাপের কারণে দুদকের তদন্তে গতি আসেনি। ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে বিপুল অর্থ অপচয় এবং দুর্নীতি। এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় প্রাথমিক অনুমানের চেয়ে অনেক গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন যে, তার প্রতিষ্ঠান সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে। তবে তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাথে তাদের সম্পর্ক সম্পর্কে তিনি স্পষ্ট কিছু বলতে চাননি। অপরদিকে, তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাউর রহমান মানিকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগগুলো দেশের অবকাঠামোগত খাতে দুর্নীতির একটি ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ করে। এই অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নিরাপদ এবং সুশাসিত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।