মাওলানা আব্দুল জলিল নামটি দুই ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিক মেজর জলিল এবং আরেকজন ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ।
মেজর জলিল (মোহাম্মদ আব্দুল জলিল):
৯ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৪২ সালে বরিশালের উজিরপুরে জন্মগ্রহণকারী মেজর জলিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর নেতা ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৯নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসাধারণ। বরিশাল অঞ্চলের মুক্তি সংগ্রামে তার ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। খুলনা বেতার কেন্দ্র মুক্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতীয় মিত্র বাহিনীর লুঠতরাজের বিরোধিতা করার কারণে গ্রেফতার হন এবং এক সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী ছিলেন। রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ১৯ নভেম্বর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন।
আরেকজন মাওলানা আব্দুল জলিল (আব্দুল জলিল চৌধুরী):
ভারতের করিমগঞ্জের বদরপুরের আরেকজন মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী একজন ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষক এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিলেট জেলার তুরুকখোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে হাদিস শিক্ষায় স্নাতক হন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও অংশ নেন। ভারত বিভাগের সময় আসামে বসতি স্থাপন করেন। দীর্ঘদিন দেওরাইল সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন এবং আসাম বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫১ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টিতে যোগদান করেন। উত্তর-পূর্ব ভারত ইমারত-এ-শরিয়াহ এবং মুসলমানদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নাদওয়াতুত তামির নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন।