দুর্যোগ: বাংলাদেশের একটি বাস্তবতা
বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু এবং জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে আমরা নিয়মিতভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হই। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, টর্নেডো, ভূমিকম্প, নদীভাঙন, ভূমিধ্বস - এসবই আমাদের জীবনে ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করে। এছাড়াও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ যেমন অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা ও সামাজিক অস্থিরতাও আমাদের জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে।
১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো ধ্বংসাত্মক দুর্যোগের অভিজ্ঞতা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে কতটা ভয়াবহ হতে পারে একটি দুর্যোগ। এই ঘটনায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসও কম ভয়াবহ ছিল না। এই ধরনের দুর্যোগে লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয় এবং বিপুল পরিমাণে সম্পদের ক্ষতি হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়, ফলে ফসলের ক্ষতি, রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়া এবং মানুষের বসবাসের অনুপযোগী পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এই দুর্যোগগুলো মোকাবিলা করার জন্য সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো (ডিএমবি) দুর্যোগ প্রশমন ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এই কাজে সহায়তা করে। তবে, দুর্যোগের ধ্বংসাত্মক প্রভাব কমিয়ে আনতে আরও ব্যাপক প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
আমাদের দায়িত্ব হলো দুর্যোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করা। সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা, নিরাপদ আশ্রয়স্থল নিশ্চিত করা এবং সতর্কবার্তা পেলে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি, তাহলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে পারবো।