এম. এ. হান্নান নামে দুজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রদত্ত তথ্যে। একজন জাতীয় পার্টির রাজনীতিবিদ এবং অন্যজন মুক্তিযুদ্ধের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। প্রথম হান্নান, এম. এ. হান্নান (১১ এপ্রিল ১৯৩৫-১৫ জুন ২০২১), জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর রাজনীতিবিদ এবং ময়মনসিংহ-৭ এর সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১৪ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ অক্টোবর ২০১৬-তে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়।
দ্বিতীয় হান্নান, এম.এ. হান্নান, বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৩০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার খাসপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মওলানা মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান ব্রিটিশ ভারতে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ভারত বিভাগের পর, ১৯৪৮ সালে তাঁর পরিবার মেহেরপুর জেলার আমঝুপিতে বসতি স্থাপন করে। এম.এ. হান্নান ১৯৪৯ সালে মেহেরপুরের দারিয়াপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫১ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজে বি.এ অধ্যয়নকালে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম নাইট কলেজে নৈশ বিভাগে ভর্তি হন এবং চার্টার্ড ব্যাংকে এবং আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সম্মেলনে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ রেল শ্রমিক লীগ এবং চট্টগ্রাম জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরিত স্বাধীনতার ঘোষণা কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে পাঠ করেন। ১৯৭৪ সালের ১১ জুন চৌদ্দগ্রামে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন এবং পরদিন ফেনী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়।