এ এফ হাসান আরিফ: একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্ব
বাংলাদেশের আইনজীবী সম্প্রদায়ের একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন এ এফ হাসান আরিফ। তার দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ পেশাগত জীবন ছিল আইন ও রাজনীতিতে এক অনন্য অভিজ্ঞতার সমাহার। ১৯৪১ সালের ১০ই জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী হাসান আরিফ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়ে পরবর্তীতে ঢাকা হাইকোর্টে পেশা শুরু করেন।
তার পেশাগত জীবন ছিল বহুমুখী। তিনি 'এ এফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস' ল ফার্মের প্রধান ছিলেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, তিনি ২০০৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের প্যানেল সদস্য ছিলেন।
২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং আইনজীবী সম্প্রদায় গভীর শোক প্রকাশ করে। সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
হাসান আরিফ তার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং গ্রামীণফোন বাংলাদেশের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনে তার অভিজ্ঞতা ও বিশেষ দক্ষতা ছিল।
হাসান আরিফের মৃত্যু বাংলাদেশের আইন অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার অবদান স্মরণীয় থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্য।