১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অঞ্চলকে ১১টি সামরিক অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়, যা সেক্টর নামে পরিচিত। প্রতিটি সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার। এই সেক্টর কমান্ডারগণ মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন, প্রশিক্ষণ, খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা, এবং পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিকল্পনা ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে যুদ্ধ ছিল অসংগঠিত ও বিচ্ছিন্ন। কিন্তু মুজিবনগর সরকারের উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠিত হলে, দেশের সামরিক কার্যক্রমকে সুসংগঠিত করার জন্য কৌশলগত ভাবে দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটিতে একজন সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৯শে এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে কলকাতায় অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুসংগঠিত সেনা কমান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জুন মাসে যুদ্ধ পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনা করে, সুষ্ঠু প্রশাসনিক ব্যবস্থার অধীন যুদ্ধ-অঞ্চল (সেক্টর) গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ১০ থেকে ১৭ জুলাই কলকাতায় সেক্টর কমান্ডারদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সেক্টরের সীমানা নির্ধারণ, কমান্ডার নিয়োগ, ব্রিগেড গঠন ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
প্রতিটি সেক্টর কমান্ডার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন, যারা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও তাদের দায়িত্বে থাকা সেক্টর নির্দিষ্ট করে তালিকাভুক্ত করা সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে আরো তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে আপনাদের জানানো হবে।