তাজউদ্দিন আহমদ

তাজউদ্দীন আহমদ: বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিচ্ছেদ্য নাম

তাজউদ্দীন আহমদ (২৩ জুলাই, ১৯২৫ - ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫) বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অমূল্য সম্পদ। স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম অগ্রণী নেতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গঠিত 'মুজিবনগর সরকারের' প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।

তাজউদ্দীন আহমদের জন্ম গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে। শিক্ষা জীবনে তিনি অসাধারণ মেধাবী ছাত্র ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং আওয়ামী লীগের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধের সময়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের পর, তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। তিনি মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকার গঠন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং ভারত সরকারের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর, তিনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দুর্ভাগ্যবশত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর, তাজউদ্দীন আহমদকেও গ্রেফতার করা হয় এবং ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫ সালে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর মৃত্যু বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘জেল হত্যা’ দিবস হিসেবে স্মরণীয়। তাজউদ্দীন আহমদের সাহস, দেশপ্রেম এবং অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
  • তিনি মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
  • তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন অন্যতম নেতা ছিলেন।
  • তিনি ১৯৭৫ সালে জেল হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
  • তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।