শ্যামলীর আদাবর

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৮:৪৮ পিএম

ঢাকার শ্যামলী ও আদাবর এলাকা: মধ্যবিত্তের আদর্শ বাসস্থান

ঢাকা শহরের মধ্যবিত্তদের কাছে শ্যামলী ও আদাবর এলাকা বেশ জনপ্রিয়। তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যের বাসস্থান এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এলাকা দুটি বেশ আকর্ষণীয়। সুপরিকল্পিত এলাকায় বাড়ি ভাড়া তুলনামূলক সাশ্রয়ী, এবং ঢাকার যেকোন প্রান্তে যাতায়াত করা বেশ সহজ।

সাম্প্রতিক সময়ে আদাবর-শ্যামলীতে প্রচুর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে স্পেস পাওয়া যায়, যার ফলে অনেক স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান এখানে অফিস স্থাপন করছে। আইটি ফার্ম, মার্কেটিং এজেন্সি এবং এনজিও সহ অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, কনভেনশন হল এবং শপিং মলও রয়েছে। মিরপুর সড়কের দুপাশে অনেক নামী ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথ রয়েছে। হোয়াইট প্যালেস কনভেনশন সেন্টার ও সূচনা কনভেনশন সেন্টারে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন সহ অন্তত ১৫টি এনজিওর শাখা আদাবর-শ্যামলীতে অবস্থিত।

ঘনবসতিপূর্ণ হলেও আদাবর-শ্যামলী বেশ পরিকল্পিত এলাকা। হাউজিং সোসাইটি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদি থাকার ফলে এখানে পরিবারসহ বসবাসের জন্য অনেক মানুষ আগ্রহী। বিভিন্ন বয়স, পেশা ও ধর্মের মানুষের বসবাসের কারণে ধর্মীয় উপাসনালয়, পার্ক, বিনোদনকেন্দ্রসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা রয়েছে। এলাকার বেশ কিছু অংশে পাড়া-মহল্লার আন্তরিকতা ও সৌহার্দ্য এখনও দেখা যায়।

আবাসিক প্রপার্টির ক্ষেত্রে ধানমন্ডি অথবা অন্যান্য নিকটবর্তী এলাকার তুলনায় আদাবর-শ্যামলীর মূল্য কিছুটা সাশ্রয়ী। ছোট ও বড় উভয় পরিবারের জন্যই উপযুক্ত বাসস্থান পাওয়া যায়। স্কুল-কলেজ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার কারণে পরিবারসহ বসবাসের জন্য এটিকে আদর্শ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

যাতায়াত ব্যবস্থা বেশ উন্নত। টোকিও স্কয়ারের সামনে থেকে নিউ মার্কেট, আজিমপুর, পুরান ঢাকা, মিরপুর, উত্তরা ইত্যাদি এলাকায় যাতায়াত সহজ। ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। রিকশা, ওবার ও পাঠাও ব্যবহার করে চলাচল করা যায়। মিরপুর রোড যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, বিভিন্ন ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, পলিটেকনিক ও মাদ্রাসা রয়েছে। সেন্ট যোসেফ, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠানও কাছেই অবস্থিত। ধানমন্ডি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাতায়াত করা সহজ।

চিকিৎসা সুবিধাও বেশ ভালো। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট হাসপাতালসহ অনেক সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারও রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালও কাছেই।

বিনোদনের জন্য শ্যামলী ক্লাব খেলার মাঠ, চাঁদের হাট খেলার মাঠ, শ্যামলী শিশু পার্ক, ঢাকা শিশু মেলা, এবং শ্যামলী স্কয়ারের পাশে শ্যামলী সিনেমা হল রয়েছে।

ধর্মীয় বৈচিত্র্যও লক্ষণীয়। অনেক মসজিদ, মন্দির ও চার্চ রয়েছে। শ্যামলী জামে মসজিদ, জহুরি মহল্লার তপোবন মন্দির, চামেলি রোডের শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির, ডাকা প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

আদাবর-শ্যামলী উত্তর ঢাকার অংশ, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের কাছে অবস্থিত। মিরপুর রোড ধরে উত্তরে গাবতলী ও মিরপুর, দক্ষিণে ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, আজিমপুর, পূর্বে আগারগাও-তালতলা, এবং পশ্চিমে মোহাম্মদপুর ও সাভারের কিছু অংশ অবস্থিত।

খাবারের জন্য মোস্তাকিম ভ্যারাইটিজ কাবাব অ্যান্ড স্যুপ, বিভিন্ন বিরিয়ানি-তেহারি রেস্টুরেন্ট, এবং শ্যামলী স্কয়ারের ফুডকোর্ট উল্লেখযোগ্য। শপিংয়ের জন্য শ্যামলী স্কয়ার, টোকিও স্কয়ার, মীনা বাজার, স্বপ্ন, আগোরা এবং মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট রয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • শ্যামলী ও আদাবর ঢাকার মধ্যবিত্তদের কাছে জনপ্রিয় বাসস্থান
  • সাশ্রয়ী মূল্যের বাসস্থান ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা
  • আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই চাহিদা বৃদ্ধি
  • পরিকল্পিত এলাকা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো
  • শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিনোদনের সুবিধা
  • ধর্মীয় বৈচিত্র্য
  • উত্তর ঢাকায় অবস্থিত, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের কাছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।