সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা, হেনস্তা করা, অপমান করা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুল হককেও বিভিন্ন অভিযোগ তুলে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, যদিও পরে তাকে কলেজে ফিরিয়ে আনা হয়। ঢাকার সরকারি আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক গীতাঞ্জলী বড়ুয়াকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা এবং পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটে। মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি, শিক্ষক হেনস্তা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের টিসি দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র ব্রহ্মের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বহুগ্রাম প্রতাপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও আদালতের ভুয়া কাগজপত্র তৈরিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নওগাঁর মান্দার পাঁজরভাঙা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আমির হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, ছাত্রছাত্রীদের বডি শেমিং ও নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য করার অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়াও রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাগুলোতে জাতীয় ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস), সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি এবং বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য জোট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ন্যায়সঙ্গত অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এসব ঘটনায় শিক্ষক সংগঠনগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মূল তথ্যাবলী:
- শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা
- শিক্ষকদের হেনস্তা ও অপমান
- অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা
- শিক্ষক সংগঠনগুলোর ভূমিকা
গণমাধ্যমে - শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণ হিসেবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অবহেলা এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।