শাহরাস্তি: চাঁদপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও পৌরসভা
বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত শাহরাস্তি উপজেলা ও পৌরসভা দীর্ঘদিন ধরে এর ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের জন্য পরিচিত। ১৯৮৩ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার একটি অংশ থেকে শাহরাস্তি উপজেলা গঠিত হয় এবং ১৯৯৮ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শহরটির নামকরণ হয়েছে হযরত শাহজালাল (রঃ)-এর সফরসঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার একজন হযরত শাহরাস্তি (রঃ)-এর নামানুসারে, যার মাজার এখানেই অবস্থিত।
- *ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:** শাহরাস্তি উপজেলার আয়তন প্রায় ১৫৪.৮১ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২,২৯,১১৮ জন। শাহরাস্তি শহরের আয়তন ১৫.৬৫ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২৮,২৮৭। ডাকাতিয়া নদী এই শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে।
- *ঐতিহাসিক গুরুত্ব:** মুক্তিযুদ্ধের সময় শাহরাস্তি বিভিন্ন যুদ্ধের সাক্ষী ছিল। নাওড়া, সূচীপাড়া, উনকিলা, নরিংপুর বাজার, খিলাবাজার, মোল্লার দরজা, সেতী নারায়ণপুর, উয়ারুক বাজার, উনজিলা বাজার ইত্যাদি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের সংঘর্ষ ঘটেছিল। শাহরাস্তি (রঃ) মাজার মসজিদ, দীনবন্ধু আশ্রম, সর্বানন্দ ঠাকুর আশ্রম, কালীমন্দির, নাওড়া মঠ প্রভৃতি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এ উপজেলার ঐতিহাসিক গুরুত্বকে আরো প্রতিষ্ঠিত করে।
- *অর্থনীতি ও শিক্ষা:** শাহরাস্তির অর্থনীতি মূলত কৃষি, ব্যবসা ও বৈদেশিক রেমিটেন্সের উপর নির্ভরশীল। এখানে ধান, গম, আলু, ইক্ষু, আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে ইত্যাদি উৎপাদিত হয়। শিক্ষার দিক থেকে উপজেলায় ২টি কলেজ, ৪টি মাদ্রাসা, ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। স্বাক্ষরতার হার ৬২.৭%।
- *সাংস্কৃতিক দিক:** শাহরাস্তিতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলা হয়। হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, ক্রিকেট, ফুটবল প্রভৃতি খেলা এখানে জনপ্রিয়।
- *উপসংহার:** শাহরাস্তি উপজেলা ও পৌরসভা চাঁদপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ধর্ম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমন্বয়ে এটি দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় একটি স্থান।