লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবির: একটি বাস্তবতা
কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থিত লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবির (ক্যাম্প-১) মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। এটি বিশাল আকারের একটি আশ্রয়শিবির যেখানে প্রায় ৫০,০০০ রোহিঙ্গা বসবাস করে। এই আশ্রয়শিবিরটি বহুবার অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৪ মে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনশর অধিক রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কয়েকশ রোহিঙ্গার ঘরবাড়ি পুড়ে যায় এবং একাধিক ব্যক্তি মারা যায়। এই ঘটনাগুলোয় অন্তত ৩ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় হারিয়ে প্রচণ্ড শীতে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটায়।
লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের অবস্থান উখিয়া উপজেলায়। আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস, তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ,সামাজিক ব্যবস্থা , শিক্ষা ,স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আমরা যত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবো, সেগুলো নিয়ে এই লেখাটি পরবর্তীতে আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এর একটি প্রতিনিধিদল লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর সংঘটিত অত্যাচার নির্যাতন ও নিপীড়নের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমদ খান রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের সাথে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ শুনেছেন। এই আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) শক্ত অবস্থান রয়েছে এবং তাদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবির মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকটের একটি কঠিন বাস্তবতার প্রতীক। এখানকার রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা, নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ বিশাল একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা আশা করি এই পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।