রামগড়: পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত রামগড় শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রশাসনিকভাবে রামগড় উপজেলার সদর এটি। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এখানকার জনসংখ্যা ২৪,৮৫৪ জন। শহরটির অবস্থান ২২°৫৯′৪১″ উত্তর ৯১°৪৪′৩০″ পূর্ব অক্ষাংশে।
ঐতিহাসিক দিক থেকে রামগড় অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ১৭৯৫ সালের ২১শে জুন এখানে ‘রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন’ নামে গঠিত হয় বর্তমান বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রামগড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৮ই এপ্রিল মুক্তিফৌজের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এখানে স্থাপিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী ‘সার্থক এ জন্ম’ নামক একটি স্মৃতিস্তম্ভ এখানে অবস্থিত। মহামুনি বৌদ্ধ বিহার, এসডিও বাংলো এর মতো প্রাচীন নিদর্শনাদিও রামগড়ের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে।
অর্থনীতিতে কৃষিকাজ এখানকার প্রধান পেশা। ধান, মিষ্টি আলু, আদা, হলুদ প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়। কাঁঠাল, লিচু, আম প্রভৃতি ফলের চাষও হয়। তাছাড়াও, কাঠ, বাঁশ রপ্তানির মাধ্যমে এখানকার অর্থনীতি গতি পায়। শিল্প কলকারখানার মধ্যে রয়েছে স'মিল, রাইসমিল, আইস ফ্যাক্টরি আদি। কুটিরশিল্প হিসেবে তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, কাঠের কাজ উল্লেখযোগ্য।
রামগড়ে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। রামগড় লেক ও ঝুলন্ত সেতু, সয়েল কনজারভেশন ও গবেষণা কেন্দ্র, রাইফেলস স্মৃতিস্তম্ভ, রামগড় হর্টিকালচার সেন্টার পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এছাড়াও, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন মসজিদ, মন্দির, বৌদ্ধ বিহার এখানে অবস্থিত। শিক্ষার দিক থেকে কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সম্প্রতি রামগড় উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পর্যটন এবং কৃষিক্ষেত্রে এটির বিরাট সম্ভাবনা থাকায় ভবিষ্যতে এই শহরটি আরো আধুনিক ও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা যায়।