যাত্রাবাড়ী থানা: ঢাকা মহানগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা
ঢাকা মহানগরীর অন্তর্গত যাত্রাবাড়ী থানা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি এলাকা। একসময় নিভৃত গ্রামীণ এলাকা হলেও, বর্তমানে এটি ঢাকা শহরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরিচিত। যাত্রাবাড়ীর নামকরণের পেছনে আছে একটি আকর্ষণীয় কাহিনী। এক সময় এ এলাকায় একটি যাত্রামন্ডপ ছিল, যেখানে নিয়মিত যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হতো। এই যাত্রামন্ডপের নামানুসারেই এলাকাটির নাম হয়ে যায় 'যাত্রাবাড়ী'।
ঐতিহাসিক তথ্য:
- ১৯৫০ সালে যাত্রাবাড়ী ছিল একটি নিভৃত পল্লী।
- একসময় এটি ব্রাক্ষ্মণচিরণ মৌজার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
- ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং নগরায়ণের ফলে যাত্রাবাড়ী বর্তমান আকার ধারণ করে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তন:
যাত্রাবাড়ী থানা ১৩.১৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের। এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সূচনা বিন্দুতে অবস্থিত। উত্তরে সবুজবাগ ও ডেমরা থানা, দক্ষিণে কদমতলী ও শ্যামপুর থানা, পূর্বে ডেমরা থানা, এবং পশ্চিমে গেন্ডারিয়া ও সূত্রাপুর থানা এর সীমান্তবর্তী। বালু নদী এ থানার একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়।
জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী যাত্রাবাড়ী থানার জনসংখ্যা ছিল ৪৪৩,৬০১ জন। এখানকার অধিবাসীদের অধিকাংশই মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মের মানুষও বসবাস করেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
যাত্রাবাড়ীতে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন:
- যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ
- শহীদ জিয়া স্কুল এন্ড কলেজ
- তা‘মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা
- এবং আরও অনেক।
অর্থনীতি:
যাত্রাবাড়ীতে গার্মেন্টস, বরফকল, চালকল, এবং অন্যান্য শিল্প কারখানা রয়েছে। এছাড়াও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজার রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান:
এখানে অনেক মসজিদ, মন্দির, গির্জা এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আছে। উল্লেখযোগ্য কিছু মসজিদের মধ্যে রয়েছে বাবর মসজিদ, বায়তুল আমান মসজিদ ও ধালপুল জাকারিণ জামে মসজিদ।
যোগাযোগ:
যাত্রাবাড়ী ঢাকা শহরের সাথে সড়কপথে ভালভাবে সংযুক্ত। সড়ক, বাস, অটোরিক্সা ইত্যাদির মাধ্যমে এখানে যাতায়াত করা যায়।
উপসংহার:
যাত্রাবাড়ী থানা ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনীতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য এলাকাটিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। আশা করি এই তথ্য যাত্রাবাড়ী থানা সম্পর্কে আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি করবে।