যশ রাজ ফিল্মস (YRF) ভারতের একটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও বিতরণ সংস্থা। ১৯৭০ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক যশ চোপড়া এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৫ সালে মুম্বাইয়ে যশ রাজ ফিল্মস স্টুডিও নির্মাণ করা হয়, যা ছয় তলা বিশিষ্ট এবং ২০ একর জুড়ে বিস্তৃত। এই স্টুডিওতে 'ফানা' (২০০৬), 'কভি আলবিদা না কেহনা' (২০০৬), 'তারে জমিন পার' (২০০৭) সহ অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের শ্যুটিং হয়েছে।
যশ রাজ ফিল্মস শুধুমাত্র হিন্দি ছবির প্রযোজনা ও বিতরণেই সীমাবদ্ধ নয়; 'গডমাধার' (১৯৯৯), 'জুবেইদা' (২০০১) এর মতো স্বাধীন ও সমান্তরাল সিনেমাও তারা বিতরণ করেছে। 'কুছ কুছ হোতা হ্যায়' (১৯৯৮), 'কাহো না... পিয়ার হ্যায়' (২০০০), 'কভি খুশি কভি গম...' (২০০১) এর মতো ব্লকবাস্টার ছবির বিতরণের মাধ্যমে তারা বাজারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ২০০৪ সালে তারা YRF মিউজিক নামে একটি স্বাধীন সঙ্গীত বিতরণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। যশ রাজ ফিল্মস 'দর', 'দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে', 'দিল টো পাগল হ্যায়' ছবির মাধ্যমে সঙ্গীত জগতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
২০০৭ সালে ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির সাথে তিনটি চলচ্চিত্রের যৌথ প্রযোজনার চুক্তি স্বাক্ষর করে যশ রাজ ফিল্মস। ২০০৯ সালে ডিজনির YRF-এর ৪৯% অংশগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা YRF-এর মূল্যায়নকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিল। ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সংস্থাটি কিছু বড় বাজেটের চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে গেছে।
২০১০ সালে আদিত্য চোপড়া যশ রাজ ফিল্মসের ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে তিনটি আলাদা ছবি আমির খান, শাহরুখ খান এবং সালমান খানকে নিয়ে প্রযোজনা করা হয়। এই ছবিগুলি যশ রাজ ফিল্মসের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছিল। ২০১২ সালে যশ চোপড়ার মৃত্যুর পর আদিত্য চোপড়া চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। YRF Entertainment যশ রাজ ফিল্মসের একটি সাবসিডিয়ারি, যা ২০২৩ সালে স্ট্রিমিং বিভাগে পরিণত হয়। যশ রাজ ফিল্মস বর্তমানে মুম্বাই, দিল্লি, জালান্ডার, জয়পুর, আমরাওয়াতি, ইন্দোর, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, চেন্নাই, কোচি এবং আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অফিস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।