মেহেরাব হোসেন জিম: এক অসাধারণ মানবতার পুরস্কারপ্রাপ্ত যুবসৈনিক
পাবনার মেহেরাব হোসেন জিম নামটি সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবিক কার্যক্রমের জগতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ২০২৪ সালের জন্য যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও দাতব্য সংস্থা ভলান্টিয়ারি সার্ভিস ওভারসিজ (ভিএসও বাংলাদেশ) কর্তৃক ‘সেরা ভলান্টিয়ার’ পুরস্কার লাভের মাধ্যমে তিনি এক নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ২০২৬ সালের মার্চ মাসে, পাবনার বেড়া উপজেলার বিপিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে তিনি তার পাঁচ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিকভাবে তাদের পুঁজি ছিল মাত্র ৫০০ টাকা, যা সংগ্রহ করা হয় তাদের নিজস্ব ও সহপাঠীদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে। এই ক্ষুদ্র পুঁজি দিয়ে তারা ১০ জন অসহায় মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম শুরু করেন।
৯ বছর ধরে ক্রমাগত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে, ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন’ দুটি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরিচালনা, এতিমখানা পরিচালনা, ‘দুই টাকায় আমেজ প্রকল্প’ এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সহায়তা ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে সহায়তা করে আসছে। তাদের কার্যক্রমে রয়েছে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা, দুস্থদের সহায়তা, মাদক ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি, পথশিশুদের খাবার বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি ইত্যাদি।
মেহেরাব হোসেন জিম বলেন, ‘অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে, তাদের তৃপ্ত হাসিই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’ তিনি আরও যোগ করেন, পড়াশোনার পাশাপাশি মানবতার সেবায় সময় ব্যয় করে ব্যক্তি, পরিবার ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা সম্ভব।
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভলান্টিয়ার দিবস অনুষ্ঠানে তাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরাব হোসেন জিমের কাজ শুধুমাত্র একজন যুবসৈনিকের সাফল্য নয়, বরং এটি সমাজের প্রতি সকলের দায়িত্ববোধ ও ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা জাগ্রত করে।