মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নান: বাংলাদেশের একজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতা
মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নান বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত জঙ্গি নেতা ছিলেন, যার নাম জড়িত ছিল দেশের একাধিক জঙ্গি হামলার সাথে। তিনি হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজিবি) এর শীর্ষ নেতা ছিলেন এবং একাধিক মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ২০১৭ সালের ১২ই এপ্রিল কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার জন্ম ও প্রাথমিক জীবনের বিস্তারিত তথ্য স্পষ্ট নয়, তবে তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা যায়।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:
মুফতি হান্নান গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা ও বরিশালের শর্ষিনা আলিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন এবং ১৯৮৭ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের করাচির জামিয়া ইউসুফ বিন নূরিয়া মাদ্রাসায় ফিকাহশাস্ত্রে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং পেশোয়ারে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হুজিবি এবং জঙ্গি কার্যক্রম:
১৯৯৪ সালে হুজিবির গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানা প্রচার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং দ্রুতই সংগঠনের শীর্ষ নেতা হয়ে ওঠেন। তার নেতৃত্বে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে যশোর, খুলনা, গোপালগঞ্জ, সিলেট, রমনা, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, হবিগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে একাধিক বোমা হামলা ও গ্রেনেড হামলা সংঘটিত হয়। এই হামলাগুলির লক্ষ্য ছিল প্রধানত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী। ২০০০ সালে গোপালগঞ্জে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনাতেও তার নাম জড়িত ছিল। ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর ঢাকার বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিচার ও মৃত্যুদণ্ড:
সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে ২০১৭ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং একই বছরের ১২ই এপ্রিল কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নানের জীবন ও কার্যক্রম বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিশ্লেষণ জঙ্গিবাদের উত্থান, বিকাশ ও প্রতিরোধ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।
মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নান: বাংলাদেশের একজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতা