বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক শহীদ: মিনারুল ইসলাম
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জে গুলিতে নিহত হন ২৭ বছর বয়সী পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী নগরীর গুড়িপাড়া-পুরাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় একটি রহস্যের সৃষ্টি হয় যখন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রজব আলী মিনারুলের পরিবারকে সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে লাশ দাফন করতে বাধ্য করেন। মিনারুলের ভাই নাজমুল হক তৎকালীন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা রজব আলীর চাপে সড়ক দুর্ঘটনা বলেই মৃত্যু সনদ দিতে বাধ্য হন।
মিনারুলের মৃত্যুকে সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার পেছনে ছিল আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা কম দেখানোর ষড়যন্ত্র। এতে জড়িত ছিলেন রজব আলী এবং তার ভাই রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নাহান পালিয়ে যায় এবং রজব আলী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করার সময় বিজিবির হাতে গ্রেফতার হন।
পরে, মিনারুলের ভাই নাজমুল হক ৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ-সদস্য শামিম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, আব্দুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। রজব আলী, তার ভাই নাহান এবং স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনও আসামি করা হয়।
মিনারুলের মৃত্যুর সত্যতা প্রমাণ করতে তার পরিবার একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তার শরীরের তলপেটে বুলেটের ক্ষত স্পষ্ট। স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলামও নিশ্চিত করেন লাশের শুধু তলপেটেই গভীর ক্ষত ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জিকেএম মেশকাত চৌধুরী মিশু এবং মিনারুলের পরিবার সড়ক দুর্ঘটনার প্রচারণার বিরোধিতা করেন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মামলাটি তদন্ত করছেন।
মিনারুল ইসলামের মৃত্যু একটি বিতর্কিত ঘটনা হয়ে রয়েছে এবং এটি জুলাই বিপ্লবের শহীদদের সাথে যুক্ত, যদিও প্রথমে তার মৃত্যুর কারণ গোপন করার চেষ্টা করা হয়।