মাহমুদা খানম মিতু

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

মাহমুদা খানম মিতু: এক অমোচনীয় হত্যাকাণ্ডের রহস্য

২০১৬ সালের ৫ই জুন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অমোচনীয়ভাবে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু রাস্তার ধারে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হন। মাত্র ৩২ বছর বয়সী মিতু ছিলেন একজন গৃহিণী এবং ছয় বছরের এক ছেলের মা।

এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রহস্যের আবরণে ঢাকা পড়ে। প্রথম দিকে ধারণা করা হয়, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার কারণে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে জঙ্গী দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তার কাজের জন্য পুরস্কারও পেয়েছিলেন। এমনকি ভারতীয় আল-কায়েদার উপশাখা আনসারুল ইসলাম এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ঘটনার নতুন নতুন দিক উঠে আসে। মিতুর পিতা মুহম্মদ মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন যে, বাবুল আক্তার নিজেই তার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করিয়েছেন। এই অভিযোগের সাথে জড়িয়ে পড়ে বাবুল আক্তারের এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের উপ-পুলিশ অফিসার আকরাম হুসেইন লিটনের স্ত্রী বনানী বিনতে বন্নীর সম্পর্কের বিষয়টি।

বাবুল আক্তারকে পুলিশ বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তে জড়িত থাকে কামরুল ইসলাম মুসা নামে একজন অভিযুক্ত, যাকে বাবুল আক্তার এবং তার সঙ্গী নবীর ইনফর্মার বলে দাবি করা হয়। মামলার দুজন আসামি রাশেদ ও নবী পুলিশি হেফাজতে মারা যায়, যার ব্যাপারে গণমাধ্যমের সন্দেহ প্রকাশ করে। বাবুল আক্তার পরে পুলিশ থেকে অবসর নেন, তবে তিনি দাবি করেন যে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেননি।

মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা লক্ষ্য করা যায়। চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশ প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআই-কে দেয়। মিতুর পিতা ও মাতা বাবুল আক্তারকেই দোষী মনে করেন, যদিও পুলিশের তরফ থেকে এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য আসেনি। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনও সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়নি, মিতুর মৃত্যুর পেছনে সত্য কী, তা এখনও অজানা। একইসাথে ইউটিউবে প্রকাশিত প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ভিডিওও মামলার আরেক অধ্যায় যোগ করেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ড ২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রামে সংঘটিত হয়।
  • পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী ছিলেন মিতু।
  • মিতুর হত্যার পেছনে জঙ্গি সংশ্রবের সাথে সম্পর্কের কথা বলা হলেও পরে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।
  • মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা এবং বিতর্ক রয়েছে।
  • হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনও উন্মোচিত হয়নি।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।