নুরুন্নাহার খানম

নুরুন্নাহার খানম: একাধিক নারীর জীবনীতে প্রতিফলিত এক নাম

প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, নুরুন্নাহার খানম নামটি একক কোনো ব্যক্তির নাম নয় বরং একাধিক নারীর জীবনীতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় উপস্থিত। প্রদত্ত লেখা থেকে আমরা কয়েকজন নারীর জীবনী সম্পর্কে জানতে পারি যাদের নামের সাথে ‘খানম’ উপাধি যুক্ত। তাদের জীবনী ও অবদানের আলোকে নুরুন্নাহার খানম নামটির বহুমুখী প্রসঙ্গ উঠে আসে।

• *উল্লেখযোগ্য খানমদের জীবনী:**
• **আশরাফী খানম:** বাংলার প্রথম মুসলিম গায়িকা যিনি গ্রামোফোন রেকর্ডে গান ধারণ করেন। তিনি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং কাজী নজরুল ইসলামের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৩৪ সালে ‘কুমারী বেবী’ ছদ্মনামে তার গান রেকর্ড করা হয়।
• **জোবেদা খানম (১৯২০-১৯৮৯):** একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক। কুষ্টিয়ার আজহারবাগে জন্মগ্রহণকারী জোবেদা খানম কলকাতা ও ঢাকায় শিক্ষা ও কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন লাভ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী এবং বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। উপন্যাস, গল্প, নাটক ও শিশুসাহিত্যে অবদান রাখেন।
• **মেহেরবানু খানম (১৮৮৫-১৯২৫):** ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য ও চিত্রশিল্পী। আহসান মঞ্জিল থেকে তার জন্ম। তার অঙ্কিত ছবি দেখে কাজী নজরুল ইসলাম ‘খেয়া-পারের তরণী’ কবিতা রচনা করেন। নারীশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
• **করিমুন্নেসা খানম চৌধুরানী (১৮৫৫-১৯২৬):** মুসলিম মহিলা কবি ও সমাজকর্মী। রংপুরে জন্মগ্রহণকারী করিমুন্নেসা বেগম রোকেয়ার বড় বোন ছিলেন। পর্দাপ্রথা পালন করেও জ্ঞানলাভের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন। দুঃখতরঙ্গিণী ও মানস বিকাশ তার দুটি গ্রন্থ। তার ছোট ভাইয়ের শিক্ষায় উৎসাহ দেন এবং বেগম রোকেয়ার কাজে সাহায্য করেন।
• **সাইদা খানম (১৯৩৭-২০২০):** বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী। পাবনায় জন্মগ্রহণকারী সাইদা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেন। বেগম, দ্য অবজারভার, ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক পুরষ্কার লাভ করেন, তার মধ্যে ২০১৯ সালের একুশে পদক উল্লেখযোগ্য।
• **আয়েশা খানম (১৯৪৭-২০২১):** নেত্রকোণার গাবরাগাতিতে জন্মগ্রহণকারী আয়েশা খানম ছাত্র আন্দোলন ও নারীমুক্তির সাথে জড়িত ছিলেন। মহিলা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন এবং নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
• *সারসংক্ষেপ:** প্রদত্ত লেখায় ‘খানম’ উপাধিধারী একাধিক নারীর জীবনী উল্লেখ আছে। তারা গান, শিক্ষা, সাহিত্য, চিত্রকলা, আলোকচিত্র এবং রাজনীতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাদের জীবনী বাংলাদেশের নারীদের ইতিহাস ও সংগ্রামের একটি বহুমুখী চিত্র তুলে ধরে।