অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য
অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, গবেষক ও উন্নয়ন কর্মী। তিনি ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তার দীর্ঘ ও সম্মানজনক একাডেমিক ও পেশাদার জীবন, উল্লেখযোগ্য গবেষণা এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সম্পৃক্ততা তার ব্যক্তিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে জন্ম নেওয়া নিয়াজ আহমেদ খানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন অবিভক্ত ভারতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তার পিতা শফিক আহমেদ খান ছিলেন জাতিসংঘের পরামর্শক। শিক্ষাজীবনে তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মানবিক বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করে ১৯৮৬ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে ইনস্টিটিউট অফ পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট থেকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পাদন করেন।
কর্মজীবন:
নিয়াজ আহমেদ খান ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ধীরে ধীরে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে যোগদান করেন। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে বিশেষ অতিথি অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন এলিজাবেথ হাউসে সিনিয়র কমনওয়েলথ ফেলো/সাউথ এশিয়ান ফেলো হিসেবে গবেষণা করেছেন। আইইউসিএন এবং ইউএনডিপির সাথেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গবেষণা ও প্রকাশনা:
ড. খান দুই শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা। বর্তমানে দেশে ও বিদেশে অনেক গবেষক তার তত্ত্বাবধানে গবেষণা করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য:
২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই নিয়োগের মাধ্যমে তিনি দেশের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে আসেন।