বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে বিভিন্ন জেলায় কার্যকর গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে পরিচিত জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নগর এলাকার জন্য ‘সিটি এসবি’ থাকলেও, গ্রামীণ ও উপশহর এলাকার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করে ডিএসবি। এই সংস্থাটির মূল কাজ হলো সরকারের নিরাপত্তা, বিদেশি নাগরিকদের তথ্য নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ, ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদান, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ।
ডিএসবি'র ইতিহাস ব্রিটিশ ভারতের আমলে ফিরে যায়। ১৮৮৭ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের প্রতিটি প্রাদেশিক সরকারের সদর দপ্তরে কেন্দ্রীয় বিশেষ শাখা স্থাপনের মাধ্যমে এর সূত্রপাত। প্রাথমিকভাবে এটি কেবলমাত্র রাজনৈতিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজেই নিয়োজিত ছিল। পরে ১৯০১ সালে এটিকে সম্প্রসারিত করে নির্বাচিত গোয়েন্দা এজেন্টদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯০৮ সালে আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনের প্রভাব গ্রামীণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা সদরে ডিএসবি কেন্দ্র গঠন করা হয়। মেদিনীপুর, বরিশাল, দেওঘর, কুষ্টিয়া, খুলনা ও যশোর ছিল প্রাথমিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে কিছু।
স্বাধীনতার পর ডিএসবি অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ওয়েবসাইট (www.specialbranch.gov.bd) এবং কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৩-২০২৮) এর মাধ্যমে ডিএসবি আধুনিকায়ন ও কার্যক্রম সহজতর করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন। ডিএসবি-র প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় ঢাকার উত্তরায় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে অবস্থিত।
ডিএসবি'র কাজের ব্যপ্তি বিশাল। অপরাধ তদন্ত থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদান ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ সবই এর অন্তর্ভুক্ত। ডিএসবি পুলিশ সুপার অথবা ইউনিট প্রধানের সফলতা মূল্যায়ন, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, প্রশিক্ষণ এবং তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে।