বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে এবং পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি জ্বালানি তেল পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি 'চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন' নামে পরিচিত। ২০২০ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২৫ সালের এপ্রিলে বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হল নৌপথের উপর নির্ভরতাকে কমিয়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যয় কমানো, সরবরাহ ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করা। বর্তমানে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ঢাকা বিভাগে জ্বালানি তেল পরিবহনে প্রায় ২০০ টি কোস্টাল ট্যাংকার ব্যবহার করা হয়। নৌপথে তেল পরিবহনের সঙ্গে জড়িত বিপুল খরচ, দুর্ঘটনা, অবরোধ, ধর্মঘট ইত্যাদির কারণে এই পাইপলাইন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকল্পটিতে চট্টগ্রামের গুপ্তখাল থেকে ঢাকার কাছে ফতুল্লা তেল ডিপো পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটারের বেশি পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া কুমিল্লা ডিপো থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার একটি শাখা পাইপলাইনও বসানো হচ্ছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল পরিবহন সম্ভব হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড অংশগ্রহণ করছে। প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৩৬৯৮৬৩ লক্ষ টাকা। এ প্রকল্পের সম্পূর্ণ ব্যয় নিজস্ব অর্থায়নে হবে বলে জানা গেছে। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বছরে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাইপলাইন প্রকল্পটিতে ৯টি জেনারেটরসহ বুস্টার পাম্প ও অন্যান্য সরঞ্জামও ব্যবহার করা হবে। পতেঙ্গা, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গোদনাইল এবং ফতুল্লা এই প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে উল্লেখ্য। প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়কালে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এই বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে একটি নতুন মাত্রা যোগ হবে।