২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন, যা 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান', 'জুলাই বিপ্লব' বা 'ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান' নামে পরিচিত, রাষ্ট্রের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে স্মরণীয়। এই আন্দোলন শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২১ সালে হাইকোর্টের রায়ের পর নতুন করে জোরদার হয়। ৫ জুন ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট কোটা পুনঃপ্রতিষ্ঠার রায় দিলে আন্দোলনকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে নামে। সরকারের দমন-পীড়নের মুখে আন্দোলন আরও তীব্র হয় এবং শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দাবিতে পরিণত হয়। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার এক বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারীদের
রাজাকারের নাতি-পুতি
হিসেবে অভিহিত করার পর আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়। ১৫ ও ১৬ জুলাই ছাত্রলীগ ও পুলিশের নির্বিচারে হামলার ফলে বেশ কিছু শিক্ষার্থী নিহত হয়। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর আন্দোলন গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের কঠোর দমননীতির মুখে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, মো. মাহিন সরকার ও আব্দুল কাদের প্রমুখ সমন্বয়ক। ২৯ জুলাই ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতের দিল্লিতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই গণ-আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যোগ করেছে।