চট্টগ্রামের সাতকানিয়া

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:৩০ পিএম

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া: একটি বিস্তারিত বিবরণ

সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক দিক থেকে সমৃদ্ধ। এই উপজেলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নীচে দেওয়া হলো:

ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তন:

সাতকানিয়া উপজেলার আয়তন প্রায় ২৮০.৯৭ বর্গ কিলোমিটার। এটি ২২°০১´ থেকে ২২°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৭´ থেকে ৯২°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে চন্দনাইশ, দক্ষিণে লোহাগাড়া, পূর্বে বান্দরবান সদর, এবং পশ্চিমে বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। সমতল ভূমি, পাহাড় এবং সাঙ্গু নদী সহ আরও কয়েকটি নদী ও খাল দ্বারা এ উপজেলা পরিবেষ্টিত। চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে এটি প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী:

২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাতকানিয়ার জনসংখ্যা ৪,৫৪,০৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,১৫,৮৪৭ জন এবং মহিলা ২,৩৮,২০৪ জন। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে বাস করে। এছাড়াও, মগ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকজন এখানে বসবাস করে।

প্রশাসন:

১৯১৭ সালে সাতকানিয়া থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।

অর্থনীতি:

সাতকানিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, আলু, সরিষা, চীনাবাদাম, কলাই, হলুদ, তুলা, এবং শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। এছাড়াও, মৎস্য, গবাদিপশু, এবং হাঁস-মুরগির খামার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। কুটিরশিল্প, যেমন স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। কলা, পেয়ারা, চীনাবাদাম, আলু, তুলা, এবং বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্র এখানকার প্রধান রপ্তানি দ্রব্য।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

সাতকানিয়ায় বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবং মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য। স্বাস্থ্য সেবার জন্য রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ইত্যাদি।

যোগাযোগ:

পাকা রাস্তা, আধা-পাকা রাস্তা এবং কাঁচা রাস্তার মাধ্যমে সাতকানিয়ার বিভিন্ন এলাকা একে অপরের সাথে এবং চট্টগ্রাম জেলার অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত।

ঐতিহাসিক ঘটনা ও দর্শনীয় স্থান:

সাতকানিয়া ঐতিহাসিক ঘটনায় সমৃদ্ধ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হন অনেক নিরীহ মানুষ। সাতকানিয়া ও সোনাকানিয়ায় প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, দীঘি, এবং মুদ্রা ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে।

বিশেষ আকর্ষণ:

হলুদিয়া প্রান্তিক লেক, আলিশা ডেসটিনি প্রজেক্ট এবং কেওচিয়া বন গবেষণা প্রকল্প সাতকানিয়ার বিশেষ আকর্ষণ।

উপসংহার:

সাতকানিয়া একটি ঐতিহ্যবাহী এবং উন্নয়নশীল উপজেলা। এই উপজেলার ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে এ উপজেলা আরও উন্নত হবে এবং এর বাসিন্দারা সুখ-শান্তিতে জীবন যাপন করবে।

সাতকানিয়ার আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমরা আপনাকে পরবর্তীতে জানাবো।

মূল তথ্যাবলী:

  • সাতকানিয়া চট্টগ্রাম জেলার একটি উপজেলা
  • ২৮০.৯৭ বর্গ কিমি আয়তন
  • ২০২২ সালে জনসংখ্যা ৪,৫৪,০৫১
  • ১৯১৭ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা
  • কৃষি, মৎস্য, কুটিরশিল্প প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ
  • মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব
  • প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, দীঘি ইত্যাদি ঐতিহাসিক নিদর্শন

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - চট্টগ্রামের সাতকানিয়া

এখানে বিজিবি নবীন সৈনিকদের একটি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।