বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হলেও কৃষি রপ্তানি খাতের অবদান তুলনামূলকভাবে কম। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে ১৪.৪১%। এই উন্নতির পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে। যেমন, সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি এবং ডলার সংকট কিছুটা কমে যাওয়া।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে ৬৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চা, শাকসবজি, তামাক, ফল, মশলা, শুকনো খাবার, তৈলবীজ, পান, প্রাণী বা উদ্ভিদ থেকে পাওয়া চর্বি ও তেল, চিনি ও মিষ্টি খাবার, পানীয়, স্পিরিট ও ভিনেগার এবং তেলসহ অন্যান্য পণ্য। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) অনুসারে, বাংলাদেশ থেকে ৬৩ মৌলিক প্রক্রিয়াজাত পণ্যসহ সাত শতাধিক কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়। প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, চিংড়ি, চা, মসলা, শুকনো ফল। এই পণ্যগুলি মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করা হয়।
কৃষি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাতকরণের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ৪৮৬টি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪১টি রপ্তানি করে এবং বাকিগুলি দেশীয় বাজারে সরবরাহ করে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ১৪৫টিরও বেশি দেশে খাদ্যশস্য, হিমায়িত মাছ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, চা, শাকসবজি, তামাক, ফুল, ফল, মসলা, শুকনো খাবার, গবাদিপশু, পোল্ট্রি ও মাছের খাবার রপ্তানি করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরবরাহ ব্যবস্থা স্থিতিশীল হলে, ডলারের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো গেলে কৃষি রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে ‘মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত’ সার্টিফিকেটের অভাব রপ্তানিতে বড় বাধা। আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন এর সমাধান করতে পারে। দেশীয় কৃষিকে আরও উৎপাদনশীল করে তুলতে হবে এবং পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে।