ডলার: একটি বিশ্বব্যাপী মুদ্রার ইতিহাস
ডলার শব্দটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। কিন্তু কীভাবে এই শব্দটি এত বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে এবং এটির ইতিহাস কেমন, তা অনেকেই জানেন না। আজকের এই প্রবন্ধে আমরা ডলারের উত্স, এর বিভিন্ন রূপ এবং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করব।
ডলারের উৎপত্তি:
ডলার শব্দটির উৎপত্তি ১৬ শতকে বোহেমিয়ার (বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র) জোয়াচিমস্থাল নামক শহর থেকে। এই শহরে তখন ২৯ গ্রাম ওজনের একটি রৌপ্য মুদ্রা তৈরি করা হতো, যার নাম ছিল জোয়াচিমস্থালার। পরবর্তীতে এটি সংক্ষেপে থালার বা ট্যালার নামে পরিচিতি পায়। এই থালার থেকেই পরবর্তীতে ডলার শব্দটির উদ্ভব।
১৭৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের জন্য অফিসিয়ালি মার্কিন ডলার চালু করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অর্থমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার হ্যামিল্টন এর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মার্কিন ডলার প্রথমদিকে রৌপ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হলেও, পরবর্তীতে এটি ফিয়াত মুদ্রায় রূপান্তরিত হয়।
বিভিন্ন দেশের ডলার:
মার্কিন ডলার ছাড়াও বিশ্বের অনেক দেশে ডলার নামে মুদ্রা ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডিয়ান ডলার, সিঙ্গাপুর ডলার, নিউজিল্যান্ড ডলার, হংকং ডলার ইত্যাদি। এসব মুদ্রার মূল্য মার্কিন ডলারের সাথে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত।
ডলারের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
ডলার বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বেশিরভাগ লেনদেন ডলারে সম্পন্ন হয়। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, ডলারের অবমূল্যায়ন ও অন্যান্য মুদ্রার উত্থান ডলারের প্রভাব কমাতে পারে।
ডলারের ভবিষ্যৎ:
বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তনের সাথে সাথে ডলারের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে ডলারের আধিপত্য ধীরে ধীরে কমতে পারে। অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন যে ডলার এখনো অনেক বছর ধরে বিশ্বের প্রধান মুদ্রা হিসাবে টিকে থাকবে।
শেষ কথা:
ডলারের ইতিহাস ও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অত্যন্ত গভীর। বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। ডলারের ভবিষ্যৎ কি হবে তা সময়ই বলে দেবে।