আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এবং জনপ্রশাসনের ২৫ ক্যাডার নিয়ে গঠিত আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের উপদেষ্টা। তিনি জনপ্রশাসনে বিদ্যমান আন্তঃক্যাডার বিরোধ, প্রশাসন ক্যাডারের প্রতি অন্যান্য ক্যাডারের ক্ষোভ, বৈষম্য এবং নানা দাবি-দাওয়ার বিষয়ে প্রথম আলোর সাথে এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন যে ২৫টি ক্যাডারের প্রধান দাবি হলো উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি। চাকরিতে প্রবেশের পরও বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি থাকার কোনো নৈতিকতা নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পক্ষে মত দিয়েছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ক্যাডারভিত্তিক মন্ত্রণালয়ের নীতি বাতিল এবং সকল ক্যাডারের জন্য সর্বোচ্চ পদে উন্নীত হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরেন। তিনি প্রশাসন ক্যাডারের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা, যেমন গাড়ি কেনার জন্য এককালীন অর্থ ও মাসিক ভাতা, এবং অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় তাদের অধিকারের বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি প্রশাসন ক্যাডারের পদ নেই, কিন্তু পদোন্নতি সুপার নিউমারারিতে হওয়ার বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে করেন।
কোটা ব্যবস্থার বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫% কোটা রয়েছে, যখন ২৫টি অন্যান্য ক্যাডারের জন্য মাত্র ২৫%। তিনি ৫০-৫০% কোটার প্রস্তাবেও একমত নন এবং বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানান।
আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল সংস্কার কমিটির সাথে তাদের দাবি উপস্থাপন করার কথাও উল্লেখ করেছেন, কিন্তু সংস্কার কমিটির অপর্যাপ্ত সময় ও বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি সংস্কার কমিটিতে সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজনীয়তার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারের অধিক ক্ষমতা ও অন্যান্য ক্যাডারের উপর তাদের প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি জনসেবার দ্রুততর প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে মত দিয়েছেন।
সর্বশেষে, তিনি প্রশাসন ক্যাডারের পদে অন্যান্য ক্যাডারের অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং উন্মুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত প্রশাসন গঠনের উপর জোর দিয়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে নয় বরং একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনের কথা তিনি জানিয়েছেন।