ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক: ২০২৪ সালের উত্তেজনা ও কূটনীতির চ্যালেঞ্জ
২০২৪ সাল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ইতিহাসে একটি উত্তেজনাপূর্ণ বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, যা কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলেছে।
শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান: ৫ই অগস্ট, ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটার পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটায়।
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ: আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও অত্যাচারের অভিযোগ প্রচারিত হয়। বাংলাদেশ এটিকে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করে। রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশের প্রতিবেদনে ভারতের ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে আসে, যারা ভুয়া খবর ও গুজব ছড়িয়েছে।
কূটনৈতিক সংকট: ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা অবমাননার ঘটনায় উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশ দুই কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে। ভারতীয় ভিসা প্রদান বন্ধ, চিকিৎসা ও হোটেল ভাড়ার জটিলতা, স্থলপথে পণ্য আমদানির বাধা ইত্যাদি কূটনৈতিক সংকট তৈরি করে।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা: এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি ডিসেম্বরে ঢাকা সফর করেন। বিশ্লেষকরা এ সফরকে উত্তেজনা প্রশমন, নিরাপত্তা, অপপ্রচার ও বাণিজ্যের দিকে নজর দিয়ে কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা হিসেবে মনে করেন। বাংলাদেশ কূটনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনার বিষয় সীমিত রাখার ও ক্ষতি কমানোর পন্থা অবলম্বনের উপর জোর দেয়।
জনগণের পর্যায়ের উত্তেজনা: ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা এবং বাংলাদেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির প্রতিফলন। ভিসা প্রদান বন্ধ, হোটেল ভাড়া না পাওয়া, সীমান্তে বিক্ষোভ ইত্যাদি জনগণের মধ্যে নেতিবাচক উত্তেজনা তৈরি করে। এই উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সমাধানের আশা: দুই দেশের নেতৃত্ব উত্তেজনা প্রশমনে সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, ভিসা, কনস্যুলেটের নিরাপত্তা এবং অপপ্রচার বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের উপর জোর দেয়া হয়। দুই দেশের মধ্যে আন্তঃনির্ভরতা ও সম্পর্কের গুরুত্ব স্বীকার করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়।