সিদ্ধিরগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক শিল্পনগরী
বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা হলো সিদ্ধিরগঞ্জ। মুঘল আমলেরও পূর্বে থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প কেন্দ্র ছিল। নরসিংদী থেকে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত ৬৫ মাইল দীর্ঘ শীতলক্ষ্যা নদী সিদ্ধিরগঞ্জের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ব্রিটিশ আমলে, ১৮৭৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, লক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের ৪.৫ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা করা হয়, যার ফলে সিদ্ধিরগঞ্জ আধুনিক শিল্প-বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে গড়ে ওঠে। প্রথম পৌর চেয়ারম্যান ছিলেন মি. এইচটি ইউলসন।
ঢাকা থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের অধীনে দশটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে শীতলক্ষ্যা নদী, নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়ক, বাড়ৈ পাড়া, নয়াপাড়া সড়ক, জালকুড়ি মৌজা, পাঠানতলী, নতুন আইলপাড়া, নারায়ণগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ২ নং ঢাকেশ্বরী কটন মিলস, আরামবাগ, রসুলবাগ, বাঘপাড়া, মীরপাড়া, চিত্তরঞ্জন কটন মিলস, আজিম মার্কেট কো-অপারেটিভ, পাঠানতলী, জালকুড়ি মধ্যপাড়া, ফতুল্লা ও কুতুবপুর উনিয়ন, সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজা, ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর ও হাজীগঞ্জ মৌজা, কদমতলী দক্ষিণ, নয়াপাড়া, ধনকুন্ডা, তালতলা এবং এনায়েতনগর এলাকা দ্বারা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে, সিদ্ধিরগঞ্জে ৩টি বেসরকারি ও ১টি সরকারি কলেজ, ১২টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮টি সরকারি মাদ্রাসা, ২টি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট এবং ১টি সার্ভে ইন্সটিটিউট রয়েছে। এছাড়াও, বিশ্বের বৃহত্তম জুট মিল আদমজী জুট মিল (বর্তমানে বন্ধ) এই থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমানে আদমজী জুট মিলের জায়গায় একটি রপ্তানিকারক বাণিজ্য এলাকা (AEPZ) গড়ে উঠেছে। জালকুড়ি (৯ নং ওয়ার্ড) এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।