শেরপুর উপজেলা

আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পিএম
নামান্তরে:
Sherpur Upazila
শেরপুর উপজেলা

শেরপুর উপজেলা: ঐতিহাসিক এক অধ্যায়

বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত শেরপুর উপজেলা রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত। ১৯৬২ সালে শেরপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে তা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। উপজেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র শেরপুর শহরের নামকরণ নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে, এখানে একসময় বাঘের বসতি ছিল, যার থেকে 'শেরপুর' নামটি এসেছে।

ভৌগোলিক অবস্থান: উত্তরে শাজাহানপুর উপজেলা, দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা, পূর্বে ধুনট উপজেলা, পশ্চিমে নাটোর জেলার সিংড়া ও নন্দীগ্রাম উপজেলা।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব: শেরপুর শুধু বগুড়ার নয়, কাশ্মীর, আফগানিস্তান, ভারতের বীরভূম, সিলেট ও ময়মনসিংহের ইতিহাসের সাথেও জড়িত। জনশ্রুতি অনুসারে, আফগান বালক ফরিদ খান নরখাদক বাঘ হত্যা করে শের খান নামে পরিচিত হন এবং তার নামানুসারেই এই স্থানের নামকরণ হয়। প্রাচীনকালে করতোয়া নদী বঙ্গ ও আসামকে পৃথক করত, এবং শেরপুরের ঐতিহাসিক পরিচয় বৌদ্ধ যুগ থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। দিল্লীর সুলতানি আমলে বগুড়া উত্তরবঙ্গের অভিযানের জন্য শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত, আর শেরপুর ছিল উপরাজধানী ও সেনা ছাউনী। মীরজুমলা (১৬৬১) আসাম অভিযানের সময় শেরপুর ও ভবানীপুরে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে।

প্রাচীন শেরপুর: আজকের শেরপুর প্রাচীন এক মহানগরীর ধ্বংসাবশেষ। এককালে এটি ধনে-জনে পরিপূর্ণ ছিল, এবং এর খ্যাতি দূর-দূরান্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। অধুনা ক্ষীণ স্রোতার করতোয়া নদী তখন করস্রোতা ছিল। বারদুয়ারী ঘাট ছিল আন্তর্জাতিক বন্দর। সোণাপুর ও বারদুয়ারী নামেও এটি পরিচিত ছিল বলে শ্রুতি আছে। শেরশাহ শুরির সময়কালে শেরপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ঘাঁটি ছিল, এবং ১৫৪০-১৫৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এর নামকরণ হয় বলে অনুমান করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২৫ এপ্রিল ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী বাঘড়া কলোনীতে ৩২ জনকে অপহরণ করে ইটখোলায় হত্যা করে। ঘোগাব্রিজ ও দড়িমুকন্দেও ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ঘটে।

প্রশাসন: ১০ টি ইউনিয়ন নিয়ে শেরপুর উপজেলা গঠিত। জনসংখ্যা প্রায় ৩,৭৫,০০০।

অর্থনীতি: শেরপুর উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর। শহরের বাইরে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ ও গবাদিপশু পালনে নিয়োজিত।

শিক্ষা: এখানে বেশ কিছু ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল এবং কলেজ, ডি জে মডেল স্কুল উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার গড় হার ৩৬.৩%।

শেরপুর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। এটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর উন্নয়ন অব্যাহত।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৬২ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা হিসেবে গঠিত।
  • বগুড়া জেলায় রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত।
  • ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ।
  • মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর অর্থনীতি।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - শেরপুর উপজেলা

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

এই উপজেলায় বিয়েতে অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে