শনির হাওর: সুনামগঞ্জের ধানের খনি
বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত শনির হাওর একটি বিশাল ও উর্বর হাওর অঞ্চল। তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণে অবস্থিত হলেও, বিশ্বম্ভরপুর এবং জামালগঞ্জ উপজেলার কিছু অংশও এর অন্তর্ভুক্ত। প্রায় ৬৬৩৮ হেক্টর আয়তনের এই হাওরের চারপাশে প্রায় ৬০টি গ্রাম অবস্থিত। পূর্বে রক্তিনদী এবং উত্তর-পশ্চিমে বৌলাই নদী দিয়ে শনির হাওর বেষ্টিত।
ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও জীববৈচিত্র্য:
শনির হাওরের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, জলাভূমি, বিল, এবং নদীর সংমিশ্রণ। এখানে ১১টি বিল রয়েছে, যেমন সোনাতলা বিল, বড় বিল, সেফটি বিল, রামচন্নাবিল ইত্যাদি। এই বিলগুলিতে প্রচুর পরিমাণ দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এক সময় এখানে গোল আলু, মিস্টি আলু, সরিষা, গম ও পাঠ চাষ হত, বর্তমানে মূলত বোরো ধান চাষ হয়। প্রায় ২০০ প্রজাতির মাছের বাসস্থান শনির হাওর।
ঋতুভেদে পরিবর্তন:
শীতকালে পানি কমে গেলে বিলের পাড় (স্থানীয় ভাষায় কান্দা) জেগে ওঠে। এই কান্দায় কৃষকরা রবিশস্য এবং বোরো ধানের আবাদ করেন, এবং এটি গোচারণভূমি হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। বর্ষাকালে পানিতে নিমজ্জিত হলেও, জেগে থাকা উঁচু কান্দাগুলোতে পরিযায়ী পাখিরা আশ্রয় নেয়। ২০১২ সালের পর কান্দাগুলো অনেক কমে গেছে বলে স্থানীয় এনজিও ও সরকারি উদ্যোগে বাঁশ বা কাঠের ছোট ছোট বিশ্রাম-দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে।
শনির হাওরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং বন্যা:
শনির হাওর সুনামগঞ্জের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৭ সালে বন্যার কারণে হাওরের অধিকাংশ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, শনির হাওরের ফসল বেশিরভাগ ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছিল স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের কারণে। এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বন্যা প্রতিরোধে সচেতনতা এবং স্ব-উদ্যোগের উপর জোর দিয়েছিলেন।
আরও তথ্য:
শনির হাওর সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য আমরা উপযুক্ত গবেষণা এবং সরকারি তথ্যের প্রতীক্ষায় আছি। আশা করি ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও বিস্তৃত লেখা প্রকাশ করা সম্ভব হবে।