বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা: সুনামগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল
সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৃষিক্ষেত্রের জন্য সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী এই উপজেলাটি সুন্দর পাহাড়ি এলাকা, হাওর-বাওর এবং নদী-নালায় পরিবেষ্টিত। এই লেখায় আমরা বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনীতি, ঐতিহাসিক ঘটনা এবং উল্লেখযোগ্য স্থান সম্পর্কে আলোচনা করব।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার আয়তন প্রায় ২৪৮.৬৩ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে সুনামগঞ্জ সদর ও জামালগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলা অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, উপজেলার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫৬,৩৮১ জন। জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি, যা উপজেলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অর্থনীতি:
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, গম, শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। এছাড়াও মাছ, বালু এবং চুনাপাথর উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। কৃষি ছাড়াও কুটিরশিল্প, যেমন স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প এবং বাঁশ ও বেতের কাজ, অর্থনীতিতে অবদান রাখে।
ঐতিহাসিক ঘটনা:
বিশ্বম্ভরপুরের ইতিহাস বেশ পুরোনো। মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে গৌরাবং, টিলাউড়া, বইসের পাড়, উবারখান্দা এবং ভাটেরটেক। উপজেলার রাজপাড়ায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
বিশ্বম্ভরপুরে অনেক উল্লেখযোগ্য স্থান রয়েছে। এর মধ্যে জালুখালি নদী, পলাশ জামে মসজিদ, দিগেন্দ্রবর্মন কলেজ, সাতগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেহপুর মুরারী চাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্বম্ভরপুর বাজার, চিনাকান্দি বাজার, ধনপুর বাজার, এবং আরও অনেক।
উপসংহার:
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সুনামগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কৃষিক্ষেত্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এবং ঐতিহাসিক ঘটনাবলী এ উপজেলার মহিমা বর্ণনা করে। এই উপজেলার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন খাতে আধুনিকায়ন এবং পরিকল্পনা গ্রহন প্রয়োজন।