প্রিন্স খালিদ বিন সালমান: একজন কূটনীতিক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী
প্রিন্স খালিদ বিন সালমান আল সৌদ (আরবি: خالد بن سلمان آل سعود) সৌদি আরবের একজন বিশিষ্ট কূটনীতিক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি এই পদে নিযুক্ত হন।
তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের দশম সন্তান এবং নবম পুত্র। সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার ছোট ভাই। ১৯৮৮ সালে জন্মগ্রহণকারী প্রিন্স খালিদ বাদশাহ সালমান এবং তার তৃতীয় স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ আল হিথলাইনের ছেলে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে, কিং ফয়সাল এয়ার একাডেমী থেকে বিমান বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রোগ্রামে তিনি সার্টিফিকেট অর্জন করেন। এছাড়াও, ফ্রান্সের প্যারিসে অ্যাডভান্সড ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার অব আর্টস ইন সিকিউরিটি স্টাডিজ প্রোগ্রামে ভর্তি হন। তবে, বিভিন্ন দায়িত্বের কারণে তার পড়াশোনা অসম্পূর্ণ থাকে।
কিং ফয়সাল এয়ার একাডেমী থেকে স্নাতক শেষ করার পর তিনি রাজকীয় সৌদি বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও তিনি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট (আইএসআইএল) এর বিরুদ্ধে প্রায় এক হাজার ঘন্টা বিমান চালিয়েছেন এবং বিমান মিশন পরিচালনা করেছেন। ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন হস্তক্ষেপেও তিনি অংশ নেন।
সামরিক কর্মজীবনের পর তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বেসামরিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ওয়াশিংটনে সৌদি আরবের রাজকীয় দূতাবাসের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন, সৌদি আরব ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি নানা স্তরে আমেরিকার নেতাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন আমেরিকান সংস্থার সাথে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
জামাল খাসোগি হত্যাকান্ডের সাথে তার নাম জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও, তিনি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সৌদি আরবের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং পরবর্তীতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন। সাম্প্রতিককালে তিনি বিভিন্ন দেশের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করছেন। তার সামরিক ও কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা সৌদি আরবের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।