বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (Ministry of Defence) হলো সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। সাধারণত এর অধীনে সকল সামরিক বাহিনী, যেমন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, অনেক সামরিক ও বেসামরিক দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় কার্যক্রম পরিচালনা করে। একজন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এই মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করেন, যিনি সাধারণত দেশের প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের অংশ হিসেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথমে সচিবালয় থেকে পরিচালিত হলেও ১৯৭২ সালে হাইকোর্ট ভবনে এবং ১৯৯৩ সালে শের-ই-বাংলা নগরের গণভবন কমপ্লেক্সে স্থানান্তরিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৪টি দপ্তর/সংস্থা নিয়ে গঠিত হলেও বর্তমানে ২৫টির বেশি দপ্তর/সংস্থা এ মন্ত্রণালয়ের আওতায় কার্যক্রম চালায়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান দায়িত্ব হলো দেশের সার্বভৌমত্ব, সীমান্ত এবং জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করা। এটি সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণ, প্রশিক্ষণ, উপকরণ সংগ্রহ এবং সামগ্রিক প্রতিরক্ষা কৌশলের পরিকল্পনা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আন্তঃবাহিনী সহযোগিতা, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন, এবং বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায়ও মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যকরী বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে রয়েছে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ (এনডিসি), ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি), বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা, প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর), এবং আরো অনেক। এনডিসি ১৯৯০ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ঢাকার মীরপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত। এটি প্রতিরক্ষা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত এবং এটি জাতীয় উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।