পূর্ণিমা রানী শীল: ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার একজন প্রতীক
২০০১ সালের ৮ অক্টোবর, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণের শিকার পূর্ণিমা রানী শীল, একজন হিন্দু নারী, যিনি সেসময় মাত্র ১৪ বছর বয়সী ছিলেন। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হিসেবে স্মরণীয়। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সমর্থক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ব্যাপক সহিংসতা চালানো হয়েছিল, আর পূর্ণিমা রানী শীল সেই সহিংসতার একজন শিকার ছিলেন।
পূর্ণিমা রানী শীলের উপর সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনার পর তদন্ত শুরু হয় এবং ১১ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১১ সালে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়; ১১ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও এই রায়ে পূর্ণিমা রানী শীল সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিলেন না।
ধর্ষণের পর পূর্ণিমা রানী শীলের জীবনে অনেক কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে। তবে তিনি শিক্ষা ও কর্মজীবনের মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্যে তিনি পড়াশোনা সম্পন্ন করেন এবং একজন সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে ঢাকায় কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে, তিনি তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০১৯ সালে তিনি মহিলা সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।
পূর্ণিমা রানী শীলের উপর সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনাটি বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের একটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। এই ঘটনাটি স্মরণ করে নারীদের সুরক্ষা এবং সমাজে নারীর অবস্থানের উন্নয়নের প্রতি আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি এবং নারী নির্যাতন রোধের জন্য কাজ করে যাব।
আশা করি, পূর্ণিমা রানী শীলের জীবন এবং তার লড়াই আমাদের সকলকে প্রেরণা যোগাবে।