নোয়াখালীর সদর উপজেলা: একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ
নোয়াখালী সদর উপজেলা বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা, যা মাইজদী নামেও পরিচিত। এর আদি নাম ছিল সুধারাম। ১৮৬১ সালে সুধারাম থানা প্রতিষ্ঠিত হয় একজন জনহিতৈষী ব্যবসায়ী সুধারাম মজুমদারের নামানুসারে। ১৯৪৮ সালে মেঘনার গর্ভে বিলীন হওয়ার পর উপজেলা সদরদপ্তর ৮ কিলোমিটার উত্তরে বর্তমান মাইজদীতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে সুধারাম থানাকে নোয়াখালী সদর থানা নামকরণ করা হয়, যা বর্তমানে নোয়াখালী সদর উপজেলা।
ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা: ২২°৩৮´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৪´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে উপজেলার অবস্থান। উত্তরে বেগমগঞ্জ, দক্ষিণে সুবর্ণচর, পূর্বে কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ, এবং পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা অবস্থিত। মেঘনা নদী ও নোয়াখালী খাল উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়।
জনসংখ্যা ও ধর্ম: ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ৩,৩১,৪৯৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ১,৬৪,১০৯ জন এবং মহিলা ১,৬৭,৩৮৪ জন। ধর্মীয়ভাবে ৩,২৩,৬৬১ জন মুসলিম, ৭,৩০১ জন হিন্দু, ৫১৫ জন বৌদ্ধ এবং ১৬ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। (২০১১ সালের সংখ্যা পাওয়া যায়নি, তাই ২০০১ সালের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা বিস্তারিত তথ্য পেলে আপনাদের জানাব।)
অর্থনীতি: কৃষি উপজেলার অর্থনীতির প্রধান উৎস। ধান, আখ, ডাল, চীনাবাদাম, সয়াবিন, শাকসবজি প্রধান কৃষি ফসল। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি প্রধান ফলমূল। নারিকেল, সুপারি, ধান, মাদুর, শুটকি মাছ প্রধান রপ্তানি দ্রব্য।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নোয়াখালী সরকারি কলেজ (১৯৬৩), ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), আহমদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৬), অরুণচন্দ্র আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৪), পৌরকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), নোয়াখালী জিলা স্কুল (১৮৫৩), ওবায়েদ উল্লাহ্ মেমোরিয়াল হাই স্কুল (১৯৭১) সহ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ: ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকবাহিনী উপজেলায় প্রবেশ করে। ১৮ জুন সোনাপুর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ: ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকার বহু লোক প্রাণ হারায়।
উল্লেখযোগ্য তথ্য: উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম সুধারাম মডেল থানার আওতাধীন। (আমরা আরও বিস্তারিত তথ্য পেলে আপনাদের জানাব।)