কাজী নওশাবা আহমেদ: একজন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মীর জীবনযাত্রা
কাজী নওশাবা আহমেদ বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতের একজন পরিচিত অভিনেত্রী। তিনি নাটক, চলচ্চিত্র এবং বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার জীবনে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক ঘটনায় জড়িত থাকার অনুভূতিও রয়েছে।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া নওশাবা শৈশব কাটান শ্যামলীর আদাবরে। তার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সেলিম উদ্দিন এবং মা নাহিদ সেলিম। শহীদ আনোয়ার স্কুল ও হলিক্রস স্কুল ও কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে ড্রইং ও পেইন্টিংয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
অভিনয় জীবন:
২০১১ সালে মুকুল আহমেদ পরিচালিত 'সোনাটা' মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয় জীবনের সূচনা করেন নওশাবা। এরপর তিনি 'ছোটবেলা বড়বেলা' নামক নাটক এবং জুয়েল মাহমুদ পরিচালিত 'ললিতা' ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। তিনি ছয় বছর ধরে সিসিমপুরের 'ইকরি মিকরি' চরিত্রে কণ্ঠদান ও পাপেট পরিচালনার সাথেও যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। 'উধাও', 'ভুবন মাঝি', 'ঢাকা অ্যাটাক', 'স্বপ্নের ঘর', 'ছায়াবৃক্ষ', 'কসাই', 'ব্যাচ ২০০৩' সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নওশাবা। তার অভিনীত 'মেঘনা কন্যা' চলচ্চিত্রটিও সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে।
রাজনৈতিক ঘটনা ও এর প্রভাব:
২০১৮ সালে 'নিরাপদ সড়ক চাই' আন্দোলনের সময় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হন নওশাবা। তারপর তিনি কিছু দিন জামিনে থাকেন এবং পুনর্বাসনে ও মানসিক চিকিৎসার আওতায় আসেন। এই ঘটনার পর তিনি ব্যক্তিগত জীবনে ও কর্মজীবনে কিছুটা পরিবর্তন অনুভব করেন।
সাম্প্রতিক ভূমিকা:
সাম্প্রতিক কালে নওশাবা শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তার এই জড়িততার ফলে তিনি নারী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় জড়িত থাকছেন।
উপসংহার:
কাজী নওশাবা আহমেদ একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী হিসেবে একইসাথে সমাজকর্মী হিসেবে ও নিজেকে স্থাপন করেছেন। তার জীবনে সফলতা এবং সঙ্কটের ঘটনা তাকে আরো দৃঢ় মানসিকতার ধারক বানিয়েছে। তার ভবিষ্যৎ কর্ম এবং অবদানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।