ধুনট উপজেলা, বগুড়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা, যা ১৯৬২ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। এটি বগুড়া জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। উপজেলার আয়তন ২৪৭.৭৩ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০২১ সালের আদমশুমারী অনুসারে জনসংখ্যা প্রায় ৩,০০,০০০ এর বেশি।
ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা: ধুনট উপজেলার অবস্থান ২৪°৩২´ থেকে ২৪°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৮´ থেকে ৮৯°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। এটির উত্তরে গাবতলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা, দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলা, পূর্বে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলা অবস্থিত। প্রধান নদী হিসেবে যমুনা, বাঙ্গালী ও ইছামতী উল্লেখযোগ্য।
নামকরণের ইতিহাস: ধুনট নামকরণের পিছনে স্পষ্ট কোন ঐতিহাসিক তথ্য নেই। তবে জনশ্রুতি অনুসারে একসময় এই এলাকা পানিতে নিমজ্জিত ছিল, পরবর্তীতে ভূমিকম্পের ফলে উর্বর ভূমি হিসেবে গড়ে ওঠে এবং জনবসতি শুরু হয়। আরেকটি জনশ্রুতি অনুযায়ী, ইছামতী নদীর তীরে দস্যুদের আধিপত্য থাকার কারণে এ এলাকার নাম ধুনট রাখা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ধুনট উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বেশ কিছু সংঘর্ষ হয়। এই সময় অনেক নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
অর্থনীতি: ধুনট উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, গম, পাট, সরিষা, পেঁয়াজ, শাকসবজি প্রধান কৃষি ফসল। এছাড়াও ছোটখাট শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা: উপজেলায় পাকা, আধা-পাকা ও কাঁচা রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও নৌপথ দ্বারা যোগাযোগ সম্ভব।
শিক্ষা: ধুনট উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধুনট ডিগ্রি কলেজ, ধুনট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ধুনট মহিলা কলেজ।
উল্লেখযোগ্য স্থান: বাইশা বিল, এলাঙ্গী বন্দরের দর্গাভবন, নীলকুঠি, জোড়খালি মাদ্রাসা, বাদশাহ সেকেন্দারের বাড়ি (বেরের বাড়ি গ্রাম) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য স্থান।
ধুনট উপজেলার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য, আপনাকে স্থানীয় প্রশাসনিক দপ্তর বা সংশ্লিষ্ট সরকারী ওয়েবসাইটগুলিতে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।