তাড়াশ

তাড়াশ: সিরাজগঞ্জের একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ উপজেলা

বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা। এই উপজেলার নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত থাকলেও, রায়বাহাদুর নামের এক জমিদারের মেয়ে ‘তারা’ থেকে এর উৎপত্তি হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। তাড়াশ উপজেলার অবস্থান ২৪°২০' হতে ২৪°৩৪' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫' হতে ৯°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। এর আয়তন ২৯৭.২ বর্গ কিলোমিটার এবং জেলা সদর থেকে ৫১ কিমি দূরত্বে অবস্থিত। উত্তরে বগুড়া জেলার শেরপুর, দক্ষিণে পাবনার ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর, পূর্বে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া এবং পশ্চিমে নাটোরের গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলা অবস্থিত।

ঐতিহাসিক তাড়াশ:

তাড়াশের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যাতে ১৩০ জন নিহত হয়। ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানেও এই উপজেলার ছাত্র নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাড়াশের ছাত্র নেতারা স্থানীয়ভাবে অস্ত্র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তাড়াশ পাকিস্তানিদের কবল থেকে মুক্ত ছিল, তবে পরে এপ্রিলে পাকিস্তানিরা গণহত্যা চালায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধা উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে চলে গিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর, ১৯৮৪ সালে তাড়াশ থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য:

তাড়াশের চলনবিল এই উপজেলাকে বিখ্যাত করে তুলেছে। এই বিলের মাছ ও শুটকি দেশে বিদেশে রফতানি হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছাড়াও তাড়াশে নবগ্রাম মসজিদ, বারুহাস মসজিদ, শাহী মসজিদ, বেহুলার কূপ, ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে।

জনসংখ্যা ও অর্থনীতি:

তাড়াশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪১৪৩৮ (অন্য সূত্র অনুযায়ী ১৬৭৬৪৭)। কৃষি এই উপজেলার প্রধান অর্থনৈতিক কার্যক্রম। ধান, চাল, তরমুজ এখানকার প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। এছাড়াও মাছ চাষ ও আহরণ, কুটিরশিল্প, স্বর্ণশিল্প ইত্যাদি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপজেলায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও বেসরকারী সংস্থা রয়েছে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

তাড়াশের শিক্ষার হার ৩৯%। উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ইত্যাদি রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য ১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৮টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ১টি ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল এবং কয়েকটি বে-সরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।

সংস্কৃতি:

তাড়াশের মানুষের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। জারি, সারি, ভাটিয়ালি, কীর্তন, ধোয়া গান ইত্যাদি গ্রামীণ সংস্কৃতি এখানে প্রচলিত। বিভিন্ন জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসব উৎসাহের সাথে পালন করা হয়।

উপসংহার:

তাড়াশ উপজেলা ঐতিহাসিক ঘটনাবলী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সমন্বয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এর উন্নয়নে আরও বেশি গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • তাড়াশ উপজেলা সিরাজগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা।
  • মুক্তিযুদ্ধে তাড়াশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
  • চলনবিল তাড়াশের প্রধান আকর্ষণ।
  • কৃষি ও মাছ চাষ এখানকার প্রধান অর্থনৈতিক কার্যক্রম।
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের প্রয়োজন।

গণমাধ্যমে - তাড়াশ

২২ ডিসেম্বর ২০২৪

এখানে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে।

ব্যক্তি:রায়বাহাদুরতারাম.ম. আমজাদ হোসেন মিলনডঃ হোসেন মুনসুরঅধ্যাপক ফজলার রহমানএ্যাডভোকেট আতাউর রহমানআমজাদ হোসেন সরকারঅধ্যাপক ফজলু মিঞাঅধ্যাপক মোসলেম উদ্দিনএম. মোবারক হোসেনমোঃ হাবিবুর রহমান তাড়াশীমোঃ আফজাল হোসেনএ্যাডভোকেট মহাসিন আলীমীর সালামগাজী আব্দুর রহমান মিঞাগাজী এম. মোবারক হোসেনগাজী আব্দুল বাছেদশহীদ ওসমান গণিম.ম. আমজাদ হোসেন মিলনমোঃ আফজাল হোসেনআব্দুস সোবাহানআমিরুজ্জামান খোকনআরশেদুল ইসলামমোঃ আতাউর রহমানআব্দুর রহমান মিঞাএম. মোবারক হোসেনআব্দুল লতিফ মির্জাসোহরাপ হোসেন সরকারবিমল বাবুআব্দুল আজিজ সরকারআব্দুল আজিজ মির্জালুৎফর রহমানইসহাক হোসেন তালুকদারগাজী আতাউর রহমানআব্দুল মান্নান তালুকদারগাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলনআব্দুল আজিজ