চাঁদপুরের কচুয়া

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:৪৯ এএম

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা: একটি বিস্তারিত বিবরণ

বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত কচুয়া উপজেলা একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ২৩৫.৮১ বর্গ কিলোমিটার (৫৮,২৭১ একর) আয়তনের এই উপজেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলার চান্দিনা ও দাউদকান্দি, দক্ষিণে হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি, পূর্বে কুমিল্লার বরুড়া ও চান্দিনা, এবং পশ্চিমে মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত। কচুয়ার ভৌগোলিক অবস্থান উত্তর অক্ষাংশ ২৩°২৯' থেকে ২৩°৪২' এবং পূর্ব দ্রাঘিমাংশ ৯০°৫৯' থেকে ৯১°০৫' এর মধ্যে।

ইতিহাস:

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে কচুয়া থানা দাউদকান্দির অধীনে ছিল। পরবর্তীতে, মহারাণী ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে এটি হাজীগঞ্জের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী হাজীগঞ্জ থেকে পৃথক হয়ে কচুয়া থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কচুয়া বাজারের নামকরণ নিয়ে দুটি জনশ্রুতি প্রচলিত। একটিতে বলা হয়েছে স্থানীয় ‘কাচওয়া’ শব্দ থেকে কচুয়া নামের উৎপত্তি। অন্যটিতে বলা হয় ১৯০৫ সালে হাজীগঞ্জ থানার সীমানা নির্ধারণের সময় ‘কুচ হুয়া’ (উর্দুতে কিছু হয়েছে) শব্দ থেকে কচুয়া নামের উৎপত্তি হয়। কচুয়া বাজার একসময় ওলি আল্লাহ হযরত শাহ নেয়ামত শাহ এর বাজার নামে পরিচিত ছিল।

প্রশাসন ও জনসংখ্যা:

বর্তমানে কচুয়া উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষের বেশি। সাক্ষরতার হার প্রায় ৫৩.৮%। কচুয়া থানা এ উপজেলার সম্পূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

অর্থনীতি ও শিক্ষা:

মূলত কৃষি নির্ভর অর্থনীতির এই উপজেলায় ধান, গম, আলু, সরিষা, তিল, আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, কুল প্রভৃতি উৎপাদিত হয়। শিল্প ও কলকারখানা হিসেবে আটা কল, হিমাগার, বরফ কল, ওয়েল্ডিং কারখানা এবং বিভিন্ন কুটিরশিল্প বিদ্যমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১টি সরকারি কলেজ, ১টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ৩টি ডিগ্রি কলেজ, প্রায় ৩০টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঐতিহাসিক স্থান ও দর্শনীয় স্থান:

কচুয়া উপজেলায় অনেক ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পাঁচশ বছরের পুরানো এক গম্বুজ মসজিদ, দুলাল রাজার দিঘি, সাচারের জগন্নাথ মন্দির, দারাশাহী তুলপাই গ্রামের তিন গম্বুজ মসজিদ, আশ্রাফপুরের তিন গম্বুজ মসজিদ, মনসা মুড়া, সাহারপাড়ের দিঘি, উজানীর বক্তার খাঁ শাহী মসজিদ এবং আশ্রাফপুরের বিশাল দিঘি। এছাড়াও, কচুয়া বাজার, রহিমানগর বাজার, সাচার বাজার, বড়দৈল বাজার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য বাজার রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ:

১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রঘুনাথপুর বাজারে রাজাকারদের হামলায় ১জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৪জন নিরীহ লোক নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধে কচুয়ায় এফ এফ ও বি এল এফ বাহিনীর যৌথ কমান্ডে অভিযান পরিচালিত হয়।

আরও তথ্য:

এই উপজেলার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য, কচুয়া উপজেলার স্থানীয় ওয়েবসাইট এবং জাতীয় ঐতিহাসিক সংরক্ষণাগারের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

মূল তথ্যাবলী:

  • চাঁদপুর জেলার একটি উপজেলা হল কচুয়া।
  • ২৩৫.৮১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ।
  • কৃষি ও কুটিরশিল্প এই উপজেলার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
  • এখানে অনেক ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কচুয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - চাঁদপুরের কচুয়া

৪ জানুয়ারী ২০২৫, ৬:০০ এএম

চাঁদপুরের কচুয়ার সাচার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।