কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই): বাংলাদেশের কৃষি খাতের অগ্রযাত্রার এক অনন্য অংশীদার
বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি দেশের সর্ববৃহৎ কৃষি সম্প্রসারণ সংস্থা, যার মূল লক্ষ্য কৃষকদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা। ডিএই'র কার্যক্রম বিস্তৃত, যার মধ্যে রয়েছে নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল সম্প্রসারণ, কৃষক প্রশিক্ষণ, ফসল সংরক্ষণ, পাট চাষিদের সংগঠন, এবং অন্যান্য কৃষি সম্পর্কিত সেবা প্রদান।
ইতিহাস:
আধুনিক কৃষি সম্প্রসারণের শুরু ১৮৭০ সালে, যখন রাজস্ব বিভাগের অংশ হিসেবে কৃষি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে ১৯০৬ সালে এটি একটি স্বতন্ত্র বিভাগে পরিণত হয়। ১৯৮২ সালে, কৃষি সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থাকে একীভূত করে বর্তমান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গঠন করা হয়।
কাঠামো:
ডিএই'র একটি বৃহৎ সংগঠনিক কাঠামো রয়েছে, যাতে অনেক উইং (শাখা) এবং দেশের প্রতিটি উপজেলায় নিজস্ব অফিস রয়েছে। এর কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩০০০ কৃষিবিদ অফিসার (বিসিএস কৃষি ক্যাডার অফিসার) এবং ১৫০০০ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ অফিসার।
কার্যক্রম:
ডিএই'র কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:
- নতুন কৃষি প্রযুক্তি ও কৌশল সম্প্রসারণ
- কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান
- ফসল সংরক্ষণে সহায়তা
- উন্নত বীজ, সার, এবং কীটনাশক ব্যবহারের তত্ত্বাবধান
- পাট চাষিদের সংগঠন ও বাজারজাতকরণ সহায়তা
- বিভিন্ন কৃষি সম্পর্কিত সেবা প্রদান।
উল্লেখযোগ্য কর্মসূচী:
অনেক উল্লেখযোগ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে ডিএই কৃষকদের সেবা প্রদান করে আসছে। যেমন, নির্দিষ্ট কিছু ফলের উৎপাদন ও সম্প্রসারণ, বালাই ঝুঁকি বিশ্লেষণ, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি, জলাবদ্ধ জমিতে ফসল উৎপাদন ইত্যাদি। আরো অনেক তথ্য উপলব্ধ হলে আমরা তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
অবস্থান:
ডিএই'র প্রধান কার্যালয় ঢাকার খামারবাড়ী, ফার্মগেটে অবস্থিত। তবে এর শাখা কার্যালয় দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিস্তৃত।
উপসংহার:
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচী এবং ব্যাপক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।