খান আবদুল ওয়ালী খান (পশতু: خان عبدالولي خان; ১১ জানুয়ারি ১৯১৭ – ২৬ জানুয়ারি ২০০৬) ছিলেন একজন পাকিস্তানি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রপন্থী সমাজতান্ত্রিক ও পশতুন নেতা। তিনি আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির সভাপতি ছিলেন। বিশিষ্ট পশতুন জাতীয়তাবাদী নেতা আবদুল গফফার খানের পুত্র ওয়ালী খান, তার পিতার মতো ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে একজন কর্মী ও লেখক ছিলেন। তার প্রথম বছরগুলো তার পিতার অহিংস প্রতিরোধ আন্দোলন, ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে "লাল শার্ট"-এ জড়িত থাকার দ্বারা চিহ্নিত। তিনি তার প্রথম বছরগুলোয় একটি হত্যাকাণ্ড থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান এবং পরে তাকে দেরাদুনের কর্নেল ব্রাউন কেমব্রিজ বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। কিশোর বয়সে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে সক্রিয় হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের পর ওয়ালী খান তার রাজনৈতিক কর্মজীবনে পাকিস্তানের রাজনীতিতে একটি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন কারণ তিনি কংগ্রেসের সাথে যুক্ত ছিলেন যা পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। পরবর্তী বছরগুলোতে একজন সম্মানিত রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি পাকিস্তানের তৃতীয় সংবিধানে অবদান রাখেন এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৮০-এর দশকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিবাদের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি পাকিস্তানের প্রথম সরাসরি নির্বাচিত সংসদে বিরোধী দলের সংসদীয় নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ওয়ালী খান ১৯১৭ সালের ১১ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ রাজের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের চরসাদ্দা জেলার উতমানজাই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল গাফফার খান (বাচা খান) ছিলেন একজন বিশিষ্ট পশতুন জাতীয়তাবাদী ও শান্তিবাদী খুদাই খিদমতগার (পশতুতে "স্বেচ্ছাসেবক") আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৪২ সালে খুদাই খিদমতগার আন্দোলনে যোগ দেন এবং পরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের তিনি বিরোধিতা করেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি পশতুন স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন করেন। ১৯৪৮ সালে বিনা অভিযোগে কারারুদ্ধ হন, ১৯৫৩ সালে মুক্তি পান। তিনি ১৯৫৬ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫৯ সালের নির্বাচনের পূর্বে সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে কারারুদ্ধ হন। ১৯৬২ সালে নতুন সংবিধান প্রবর্তনের পর বিরোধী নেতা হিসেবে ফাতিমা জিন্নাহকে সমর্থন করেন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৬৮ সালে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের পূর্ব পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় বিরোধী দলের নেতা হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নে অবদান রাখেন। ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি নিষিদ্ধ হলে তিনি আবারও কারারুদ্ধ হন। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) গঠন করেন। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে পিপিপির সাথে জোটবদ্ধ হন। ১৯৯০ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। ২০০১ সালে তালেবানের উপর মার্কিন হামলাকে সমর্থন করেন। ২০০৬ সালে মারা যান।
ওয়ালী খান
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৯ পিএম
মূল তথ্যাবলী:
- খান আবদুল ওয়ালী খান একজন পাকিস্তানি পশতুন নেতা ছিলেন।
- তিনি আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির সভাপতি ছিলেন।
- তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
- পাকিস্তানের তৃতীয় সংবিধান প্রণয়নে অবদান রেখেছেন।
- তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করেছেন।
একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।