আত্মরক্ষা

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:৫৪ পিএম

মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি: একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

১৯৪০-এর দশকে ভারতের বাংলায় কমিউনিস্টদের উদ্যোগে গঠিত হয় ‘মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি’ (ম.আ.রা.স)। ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলন ও নারীদের আর্থ-সামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে গঠিত এই সংগঠনটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ১৯৪৩ সালের মহাদুর্ভিক্ষের সময়কালে নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ম.আ.রা.স. প্রতিষ্ঠার পূর্বেই কংগ্রেস মহিলা সংঘ (১৯৩৯) এবং অল বেঙ্গল গার্ল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এবিজিএসএ) (১৯৩৯) নারীদের আত্মরক্ষা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য কাজ করছিল। কমিউনিস্ট নারী নেতারা এই গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করে ১৯৪২ সালে ‘উইমেন’স সেল্ফ-ডিফেন্স লিগ’ গঠন করেন, যা পরবর্তীতে ১৯৪৩ সালে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি নামে পরিচিতি পায়।

রেণু চক্রবর্তী, কমলা মুখোপাধ্যায়, ইলা রেইড, গীতা মল্লিক ও মণিকুন্তলা সেনসহ অনেক নারী নেতা ম.আ.রা.স. গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুসলিম নারীদেরও যথেষ্ট অংশগ্রহণ ছিল। সকিনা বেগম, কলকাতা হাইকোর্টের একমাত্র নারী অ্যাডভোকেট, ও এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

সংগঠনের তিনটি মূল লক্ষ্য ছিল: প্রতিরক্ষা, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং দুর্ভিক্ষ থেকে জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা। মহাদুর্ভিক্ষের সময় ম.আ.রা.স. ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে, ভুখা মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে সরকারের খাদ্যনীতির সমালোচনা করে।

১৯৪৩ সালের ১৭ মার্চ কলকাতা অ্যাসেম্বলি হাউজের সামনে ৫০০০ নারীর একটি বৃহৎ ভুখা মিছিল উল্লেখযোগ্য। ম.আ.রা.স. তেভাগা আন্দোলনে সরাসরি নেতৃত্ব না দিলেও, আন্দোলনে কৃষক ও আদিবাসী নারীদের অংশগ্রহণের পেছনে সংগঠনের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য।

১৯৪৩ সালে ২২,০০০ সদস্য নিয়ে শুরু হওয়া মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির সদস্য সংখ্যা ১৯৪৪ সালে বেড়ে ৪৩,০০০ এ দাঁড়ায়। ১৯৪৭ সালে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে ‘পশ্চিমবঙ্গ মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি’ করা হয়। মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি এবং মহিলা সমিতি (সিপিআই) নামে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনে রূপান্তরিত হয়।

আরও তথ্য পাওয়া গেলে, এই লেখাটি সম্পূর্ণ ও আরও স্পষ্টভাবে আপডেট করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি (ম.আ.রা.স.) ১৯৪০-এর দশকে ভারতের বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলন ও নারী মুক্তির লক্ষ্যে কমিউনিস্টদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন।
  • রেণু চক্রবর্তী, কমলা মুখোপাধ্যায়, সকিনা বেগমসহ অনেক নারী নেতার অবদান।
  • ত্রাণ কার্যক্রম, ভুখা মিছিল, তেভাগা আন্দোলনে অংশগ্রহণ।
  • ৪৩,০০০ সদস্যের বেশি ছিল ম.আ.রা.স-এর।
  • গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি এবং মহিলা সমিতি (সিপিআই)-এর উত্তরসূরি।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।